সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হল দুই পর্যটক যুবকের । শুক্রবার বিকেল ৫ঃ৩০ মিনিট নাগাদ ওল্ড দিঘার ক্ষণিকা ঘাটে স্নান করতে নামে সুগম পাল ও শুভজিৎ পাল। ক্ষণিকা ঘাটে স্নানে নামার পর পাড়ে ওঠার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে দুই যুবকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পাড়ে থাকা পরিবারের লোকেরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে দীঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান দীঘা থানার পুলিশ অফিসার দিবাকর দোলাই। পরে মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুই যুবকের মৃত্যুতে পরিবারের লোকেরা কান্নায় ভেংগে পড়েন।
এই ঘটনায় পর পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্যোগের সময় যাতে পর্যটকরা সমুদ্রে না নামেন তার জন্য বার বার সতর্ক করা হয়। তারপরেও একশ্রেণীর পর্যটক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রে নেমে পড়েন। এর ফলে বিপদ ঘটছে। সমুদ্র সৈকতে নজরদারী আরও বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে। অনেকে বলছেন, বিকেলে বাজ পড়ার ঘটনা ঘটায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। সকালে বা দুপুরে এই ঘটনা ঘটলে আরও বেশী প্রাণহানী হতে পারত কারন রথ উপলক্ষ্যে দীঘায় এখন তিল ধারনের জায়গা নেই তার ওপর সপ্তাহের শেষ। ফলে বড় বিপদ হতে পারত ভিড়ে ঠাসা সমুদ্রে বাজ পড়লে।
পুরুলিয়ায় ভয়ঙ্কর বজ্রপাত। মৃত তিন মহিলা। জখম আরও চার
বজ্রপাতের ঘটনায় জেলায় পৃথক পৃথক ঘটনায় মৃত্যু হল তিন মহিলার। ঘটনায় জখম আরো চার মহিলা। জখমদের চিকিৎসা চলছে পুরুলিয়া মেডিক্যাল হাসপাতালে। স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানাগিয়েছি, বাসের জন্য পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার টকরিয়াতে অপেক্ষা করছিলেন বেশ কয়েকজন মহিলা। সেই সময় সেখানে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ছিটকে পড়ে তিন মহিলা। তাদেরকে উদ্ধার করে পুরলিয়া মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষনা করেন বাসন্তি মুর্মু(৬২)। জখম হন ভারতি টুডু ও সুন্দরি সোরেন। তাদের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিন মহিলার বাড়ী বোরো থানার কুটনি গ্রামে। কয়েক দিন আগে তারা আত্মীয়ের বাড়ী বরাবাজারের ভালুকডুঙ্গরি গ্রামে গিয়েছিলনে।
এদিন বাড়ী ফেরার জন্য টকরিয়া মোড়ে বাসের অপেক্ষা করছিলেন তারা। অন্যদিকে মাঠে চাষের কাজ করার সময় মৃত্যু হয় চন্দনা মাহাতো (৫৫)। তার বাড়ী আড়ষা থানার বালিয়া গ্রামে। অন্যদিকে কোটশিলা থানার চাতরানি গ্রামে পুকুরে স্নান করে আসার সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় ইরা কুমার (৩৫) নামে এক মহিলার। অন্যদিকে স্নান সেরে বাড়ী ফেরার সময় ব্জ্রপাতে জখম হয় কোটশিলা মোহনপুর গ্রামের বছর ১৪ মৌসুমি মহাদানি নামে এক কিশোরির। অন্যদিকে হুড়ার খৈরিপিহিড়া গ্রামে বজ্রপাতে জখম হন জ্যোৎস্না গরাই নামে এক মহিলা। ঘটনায় চার মহিলারচিকিৎসা চলছে পুরুলিয়ার মেডিক্যাল হাসপাতালে।
শালবনি
শালবনিতে বজ্রাঘাতে নিহত ২। শুক্রবার প্রথম মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি ব্লকের কর্ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহারকলাবেড়িয়া গ্রামে। মৃত কিশোরের নাম খান্দু হাঁসদা, তার বয়স দশ বছর। তার পরিবার সূত্রে জানা যায় যে শুক্রবার বাড়ির গরু নিয়ে মাঠে চরাতে গিয়েছিল। সেই সময় আচমকা বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়। বাজ পড়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে দেখে সে মাটিতে পড়ে রয়েছে। তার গোটা শরীর আগুনে ঝলসে গিয়েছে। তবে গরুগুলি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছে। ঘটনাস্থলেই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। কিন্তু গরুগুলি প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেয় শালবনি থানার পুলিশকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ওই কিশোরের মৃতদেহ টি উদ্ধার করে ময়নাতনদের জন্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এর মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন – কাঁথি পুরসভা ডেপুটেশন দিতে এসে কাউন্সিলরের হাতে শ্লীলতাহানি শিকার এক মহিলা
তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।শুক্রবার দুপুরে দ্বিতীয় মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি ব্লকের বড় কলসি ভাঙা গ্রামে। মৃত মহিলার নাম আমিনা বিবি। তার বয়স 40 বছর ।স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে শুক্রবার দুপুর নাগাদ ছাগল নিয়ে গ্রামের মাঠে চরাতে গিয়েছিল আমিনা বিবি। সেই সময় আচমকা ভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয় । বজ্রপাতের ফলে ঘটনাস্থলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ।তার সাথে থাকা দুটি ছাগলও ঘটনাস্থলে মারা যায় । স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে দেখে তার গোটা শরীর আগুনে ঝলসে গিয়েছে এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা গিয়েছেন ।