আক্রান্ত হলো সলমন খুরশিদের বাড়ি। অযোধ্যা কাণ্ড নিয়ে বইয়ে হিন্দুত্ব সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আক্রান্ত হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা সলমন খুরশিদ। অভিযোগ, হিন্দুত্ববাদীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে সলমন খুরশিদের নৈনিতালের বাড়ি। পাশাপাশি খুরশিদের বিতর্কিত ওই বইয়ের প্রকাশ ও বিক্রির উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছে দিল্লি হাই কোর্টে।
অভিযোগ, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা নিয়ে লেখা বইয়ে বিজেপি এবং আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ) হিন্দুত্বকে আইএস বা বোকো হারামের জেহাদি ইসলামের সঙ্গে তুলনা করেছেন খুরশিদ।জানা গিয়েছে, নৈনিতালে খুরশিদের বাড়িতে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। অভিযোগ, হামলা চালানোর সময় হামলাকারীদের হাতে বিজেপির পতাকা ছিল। বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পরে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পোড়ানো হয় খুরশিদের কুশপুত্তলিকা।
ঘটনার পরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ছবি পোস্ট করে খুরশিদ ফেসবুকে লেখেন, আমি আশা করেছিলাম যে বন্ধুরা এই কাজ করেছেন তাঁদের জন্যই ওই বাড়ির দরজা এক দিন খুলে দেব। আমি যদি বলি এটা হিন্দুত্ব হতে পারে না তা হলে কি ভুল বলা হবে?
খুরশিদের বক্তব্য, তা হলে বিতর্কের চেহারাটা এখন এমন। লজ্জাজনক শব্দটা দিয়ে পরিস্থিতি বোঝানো যাবে না। তবে আমার এখনও আশা এক দিন আমরা এক সঙ্গে বসে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা করতে পারব। সেখানে মতান্তর হতেই পারে। এই ঘটনায় ভারতের কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় রয়েছে তাদের কাছে দেশের ৮০ শতাংশ বাসিন্দা, যাঁরা হিন্দু ধর্মের আচার পালন করেন তাঁরাই প্রকৃত ভারতীয়।
অন্য দিকে সলমন খুরশিদের বই প্রকাশ ও বিক্রির উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছেন দিল্লির আইনজীবী বিনীত জিন্দল। তিনি আবেদনে জানান, খুরশিদ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও বর্তমানে সংসদের সদস্য। তাঁর বইয়ে থাকা মন্তব্যে দেশের নিরাপত্তা, শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। জানা গিয়েছে, সলমন খুরশিদের বিতর্কিত বইটিতে বাবরি ধ্বংসের পরে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিংহ রাও ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন স্ত্রীর কাছে স্বামীর কোন কোন স্বভাব বিরক্তিকর? জানুন
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ওই ঘটনা ঘটে। খুরশিদ জানান, ঘটনার পরে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন সকলে। পরের দিন সকালে সংসদের একটি ঘরে বৈঠকে বসেন মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। স্তব্ধতা ভেঙে মাধবরাও সিন্ধিয়া বলেন, আমরা সকলেই প্রধানমন্ত্রীর জন্য দুঃখিত। জবাবে নরসিংহ রাও বলেন, আমার জন্য আপনাদের সহানুভূতির প্রয়োজন নেই।’’ খুরশিদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়ার পরে ওই বিষয়ে কথা আর এগোয়নি।
উল্লেখ্য, সলমন খুরশিদের ওই বইটিতে সালমান দাবি করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সনাতন ধর্ম ও ক্লাসিক্যাল হিন্দুত্ববাদ, যা চর্চা করতেন মুনি ঋষিরা, তা পাশে ফেলেছে এক ধরনের হিন্দুত্ববাদেদের কট্টর ভার্সন। সালমান খুরশিদ এটাকে জিহাদী ইসলামি কট্টরপন্থী গ্রুপ আইএস ও বোকো হারামের রাজনৈতিক ভার্সনের সঙ্গে তুলনা করেন।