অনিশ্চিত টাকি সাংস্কৃতিক গ্রামীণ বইমেলা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহাকুমার ভারত-বাংলাদেশ টাকি সীমান্তের ইচ্ছামতী পাড়ে টাকি সাংস্কৃতিক গ্রামীণ বইমেলা এক প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৯ প্রায় ৩৫ বছর ধরে এই মেলা টাকি এরিয়ান ক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে করোনা মহামারীর জন্য বন্ধ ছিল এই টাকি বই মেলা।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তর যখন ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছেন তখন হটাৎ করে এই বই মেলা কেনো বন্ধ হয়ে গেলো সেটা নিয়ে রহস্য দানা বেধেছে বসিরহাট বাসীর মনে। যে সময় মেলা শুরু হয় প্রতি বছর সেই ১০ ডিসেম্বর তারিখ ইতিমধ্যেই পাড় হয়ে গেছে। টাকি সাংস্কৃতিক ও গ্রামীণ বইমেলা শুরু করার জন্য প্যান্ডেল বাধার কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু মেলা শুরু করা গেলো না।
রাজনীতির বেড়াজালে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে টাকি বইমেলা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরেই মেলা কমিটিতে নেতৃত্ব করে আসছে সিপিআইএম পরিচালিত কমিটির লোকজন । মেলা কমিটির হিসাব পরীক্ষক অনুপ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন কিছু লোক অযথা ঝামেলা সৃষ্টি করার কারণে মেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। অন্য দিকে টাকি পৌরসভা উপ পৌর প্রশাসক আজিজুল গাজী অভিযোগ করেন প্রচুর আর্থিক অনুদান দিয়েই মেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এতদিন ধরে ।
কিন্তু তারা কোনভাবে সাম্মানিক পদ ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না । পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়ক এবং স্বয়ং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগাতে দেওয়া হয় না মেলার মঞ্চে বা তোরণ গেটে। এই নিয়ে নতুন প্রজন্ম তীব্র প্রতিবাদ জানায় । আমরা পৌরসভার থেকে আর্থিক, প্রশাসনিক সবরকম সাহায্য করি। কিন্তু আমরা কোন সম্মান পাই না।
টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুৎ দাস বলেন, করোনা আবহে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার যেখানে মানুষকে বিনামূল্যে দুয়ারে রেশন পাঠাচ্ছে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে বিল মূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা চালু করেছে সেখানে ২০ টাকা করে টিকিট কেটে কেন এই বই মেলা দেখতে আসবে মানুষ। রোজগার নেই কাজ হারানো মানুষ ও তার পরিবার কোথা থেকে পাবে অর্থ।
পাশাপাশি দীর্ঘ ৩৫ বছর এই মেলার নির্দিষ্ট কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি এখনো পর্যন্ত। আমরা জানতে চাইলে তখনই ঝামেলা সৃষ্টি হয় প্রতিবাদ করি । সামনে পৌরসভা নির্বাচন তাই তৃণমূল কংগ্রেস ওপর দায় চাপিয়ে এই মেলা বন্ধ করে দিয়েছে সিপিআইএম ও বিজেপি।
আর ও পড়ুন মিস ইউনিভার্স-এর মাথার মুকুটের মূল্য কত? আপনি কি জানেন?
এটা সম্পূর্ণ চক্রান্ত এই মেলা করতে হবে বিনামূল্যে। মানুষের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, বিনোদন সব রকম পরিষেবা বিনা পয়সায় পাবে। টাকি পৌরসভার গভর্নিং বডির সদস্য চিনময় মন্ডল বলেন চক্রান্ত করে মেলাটা সিপিআইএম ও বিজেপি বন্ধ করেছে। আমরা চাই এই মেলা বিনামূল্যে হোক। মানুষ পরিষেবা পাবে সামনে টাকি পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে পালে হাওয়া লাগাতে এই চক্রান্ত করা হয়েছে।
মেলা কমিটি তারাই পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক অভিসন্ধি করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। টাকি পৌরসভার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে আছে, যতই চক্রান্ত করুক একদিন মেলা কমিটির দুর্নীতি আর্থিক তছরুপ প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসবে। সেদিন সংস্কৃতি প্রেমী মানুষ কে কৈফত দিতে হবে বর্তমান মেলা কর্তৃপক্ষকে ।