অবসরের কথা ভাবছেন সাকিব,তবে কেন এরকম ভাবনা, জানুন বিস্তারিত । টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরতি নেওয়ার কথা ভাবছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন এই তারকা অলরাউন্ডার। পরিবারকে সময় দিতে প্রয়োজনে আইসিসি ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে কোনো ম্যাচেও অংশ না নেওয়ার পরিকল্পনা আছে তাঁর। নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের আসন্ন টেস্ট সিরিজ এড়িয়ে যাবেন এবং লাল বলের ক্রিকেটে তার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।
সাকিব বাংলাদেশের হয়ে তিনটি ফরম্যাটেই খেলেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ঘন ঘন বিরতি নিচ্ছেন। তিনি অক্টোবর ২০১৯ থেকে অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত খেলাধুলা থেকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞাও পরিবেশন করেছিলেন দুর্নীতির পদ্ধতির রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য। ৩৪ বছর বয়সী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান (১২,৫২৩ ফরম্যাট জুড়ে রান) এবং টেস্ট (২১৫), ওয়ানডে (২৭৭) এবং T20 (১১৭) এ তাদের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে তিনি ৫৯টি টেস্ট, ২১৫টি ওয়ানডে এবং ৯৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন।
তবে সাকিব বলেছেন যে তার “টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভাবার” সময় এসেছে কারণ বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত তিনটি ফরম্যাটে খেলা তার জন্য “অসম্ভবের কাছাকাছি” হয়ে গিয়েছে। “আমি জানি কোন ফরম্যাটকে গুরুত্ব দিতে হবে বা অগ্রাধিকার দিতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এটাই বাস্তবতা: আমি টেস্ট খেলব কি না। এবং তা হলেও, আমি কীভাবে ফরম্যাট খেলব। ঢাকা-ভিত্তিক একটি টিভি চ্যানেল সাকিব বলেন, “আমাকে ওডিআইতে অংশগ্রহণ করার প্রয়োজন আছে কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে। যেখানে কোনও পয়েন্ট ঝুঁকির মধ্যে নেই। আমার আর কোনও বিকল্প নেই।”
“আমি বলছি না যে আমি টেস্ট থেকে অবসর নেব। এমনও হতে পারে যে আমি ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি খেলা বন্ধ করে দেব। আমি টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলতে পারি। কিন্তু তিনটি ফরম্যাটে খেলা প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি। “৪০-৪২ দিনের মধ্যে দুটি টেস্ট খেলা ফলপ্রসূ হয় না। এটি একজনকে বেছে বেছে খেলতে উত্সাহিত করে। আমি অবশ্যই বিসিবির সাথে ভাল পরিকল্পনা করব এবং তারপরে এগিয়ে যাব। নিউজিল্যান্ডে অনুশীলনে নেমে যাওয়া বাংলাদেশ দলটিকে সব হিসাবেই কমজোরি বলতে হবে। সেটা অভিজ্ঞতার বিচারে আরও দুর্বল হয়ে গেছে তামিম ইকবাল ও সাকিবের মতো ক্রিকেটার না যাওয়ায়। সাকিবের টেস্ট খেলতে না যাওয়া নিয়ে আলোচনার সঙ্গে আছে সমালোচনাও।
আর ও পড়ুন নতুন বছরে আসছে আরও এক প্রাণঘাতী ভাইরাস! ভবিষ্যৎবাণী বাবা ভাঙ্গার
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে জানিয়ে গেছেন তাঁর ভবিষ্যত পরিকল্পনা। এসব ঘটনার মূলে আছে কোয়ারেন্টিনের বিভীষিকা। সেটি কতটা ভয়ংকর লেগেছে সাকিবের, তা বলছিলেন তিনি, ‘আমার কাছে মনে হয়—জেলখানায় যদি আপনাকে দিয়ে দেওয়া হয়, যেমন জীবন থাকবে, ঠিক তেমনই। জেলখানায়ও মানুষ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারে। তবে, এমন নয় (যে), খেলোয়াড়েরা অনেক ঘোরাঘুরি করেন। যখন আপনি জানবেন, চাইলেই বের হতে পারবেন না, প্রবলেম সেখানে। যেটা মনে হচ্ছে—করোনা খুব দ্রুত যাওয়ার নয়।
এর মধ্যে বেঁচে থাকতে হলে আমাদের অন্য একটা পথ বের করতে হবে।’ সাকিবের তিন সন্তানই দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে ভাবনায় তিনি। পারিবারিক জীবনে স্থিতাবস্থা সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে তাঁর কাছে। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘যখন আপনার তিনটা ছোট ছোট বাচ্চা থাকবে। আপনি তাদের সময় দিতে পারবেন না। তাদের সঙ্গে দেখা (হবে) আট-দশ দিনের জন্য। তার পর আবার আপনি দেড়-দুই মাসের জন্য বাইরে। আবার ১৫ দিনের জন্য দেখা হবে। এটা বাচ্চাদের বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্র খুবই আনহেলদি ব্যাপার। আমি চাই না, আমাদের বাচ্চারা সেভাবে থাকুক।’