মুর্শিদাবাদ – মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভার কাবিলপুর পঞ্চায়েতে বৃহস্পতিবার বড়সড় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটল। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বাম-কংগ্রেস জোটের হাত থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চায়েতটি ছিনিয়ে নিল। সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের দলীয় কার্যালয়ে তাঁর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন কাবিলপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রোজিনা বেগম, উপপ্রধানের স্বামী আব্বাস আলি সহ প্রায় ১৫০ জন বাম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক।
রোজিনা বেগমের পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে বাম ঘরানার বলে পরিচিত। তাঁর শ্বশুর প্রয়াত জয়নাল আবেদিন চারবার বামফ্রন্টের টিকিটে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে রোজিনা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্যে যে উন্নয়ন চলছে, তার সঙ্গী হতে চেয়েই এই সিদ্ধান্ত। তিনি আরও জানান, বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস তাঁকে বরাবর উন্নয়নমূলক কাজে সহায়তা করেছেন, কিন্তু বাম-কংগ্রেস জোটের মধ্যে থেকে তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলেন না।
উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৫ আসনের মধ্যে তৃণমূল ১২টি, কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট ছ’টি করে এবং একটি আসনে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জয়ী হন। সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বাম-কংগ্রেস জোট কাবিলপুর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে এবং রোজিনাকে প্রধান করা হয়।
রোজিনার যোগদানের পর বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস বলেন, “বাম-কংগ্রেসের প্রধান তৃণমূলে আসায় কাবিলপুর পঞ্চায়েত এখন আমাদের দখলে। আমরা সবাই মিলে পঞ্চায়েতের উন্নয়নে কাজ করব।” যদিও স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের দাবি, এর আগেও রোজিনা একবার স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে তৃণমূলে যোগ দেন, এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাইরন বিশ্বাসের উপস্থিতিতে নতুন করে দলে যোগ দিলেন।
অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক জমির মোল্লা জানিয়েছেন, “রোজিনা বেগমকে দলবিরোধী কাজের জন্য আগেই সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
এই ঘটনায় সাগরদিঘি অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, যা আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
