ফের মন খারাপের কালো মেঘ সাফারিতে। সাফারির আশ্রয়ে থাকা উদ্ধার ক্যাঙারু ত্রয়ের মধ্যে মৃত্যু এক ক্যাঙারুর। শুক্রবার সকাল ৯.৩০নাগাদ সাফারিতে ক্যাঙারুটির মৃত্যু ঘটে। গত ১লা এপ্রিল জলপাইগুড়ি জেলার গাজলডোবা ও শিলিগুড়ি নেপালী বস্তি থেকে উদ্ধার করা হয় এই তিন ক্যাঙারুকে। এদের মধ্যে নেপালী বস্তি থেকে উদ্ধার হওয়া ক্যাঙারুটির মৃত্যু ঘটে এদিন। সম্প্রতি শিলিগুড়ি শালুগাড়ার বন্যপ্রাণ উদ্যান বেঙ্গল সাফারি পার্কে সদ্যোজাত রয়াল বেঙ্গল শাবকেরও মৃত্যু হয়।
এদিনের ক্যাঙ্গারুটির মৃত্যুর বিষয়ে সাফারির বন্যপ্রানী চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে ক্যাঙারুটির অতিরিক্ত মানুষের সংস্পর্শে চলে আসায় ভয়ভীত হয়ে পড়ে। যে কারনে ক্রনিক ক্রেপচার মায়াপ্যাথিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ক্যাঙারুটির। উদ্ধার হওয়া অন্য দুই ক্যাঙারু অপেক্ষা তুলনামূলক ভাবে কিছুটা দূর্বল ছিল এটি। ক্যাঙারুগুলি পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হচ্ছিল যার জেরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল উদাসীন মানসিকতাসম্পন্ন দুষ্কৃতিদের অযত্নশীল ভাবেই বিদেশ বিভুঁইয়ের বন্যপ্রাণী ক্যাঙ্গারুগুলিকে পরিবহন করা হয়।
দুষ্কৃতিদের ক্রমাগত অসাবধানী স্পর্শ পড়ে ক্যাঙারু গুলির শরীরে। সাফারির মেডিকেল টিম জানায় সচেতনহীন ভাবে মানুষের ছোঁয়া ও জমায়েত এলাকায় মানুষের সংস্পর্শে এসে পড়ায় ভীতি সতস্ত্র হয়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রতীকী প্রাণ এই নিরীহ জীবগুলি। শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর দাওয়া সাংমু শেরপা জানান প্রথম থেকেই বাকি দুজনের তুলনায় এই ক্যাঙারুটি কিছুটা দূর্বল ছিল। ডিহাইড্রেশন তো ছিলই।দুদিন-তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৪ঘন্টা একজন বন কর্মী ও বন্যপ্রাণ চিকিৎসকের দেখরেখে সাফারির লেজার ক্যাটের জন্য তৈরী একটি ফাঁকা পড়ে থাকা এনক্লোজারে পৃথকভাবেই রাখা হয় তিন ক্যাঙ্গারুকে। পর্যটকদের সামনে আনা হয়নি তাদের।
এমনকি ক্যাঙারু এনক্লোজারে বন কর্মীদের যাতায়াতও নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। তিনি বলেন দুর্ভাগ্যবশত বহু চেষ্টার পরও এই ক্যাঙ্গারুটিকে বাঁচানো সম্ভব হলো না। সকালেই বনকর্মীদের বিষয়টি নজরে আসে বন্যপ্রাণ চিকিৎসক তৎক্ষণাৎ ক্যাঙ্গারুটিকে পর্যবেক্ষণ করেন। সাফারির মেডিকেল টিমকে দিয়েই মৃত ক্যাঙারুটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সাধারণত ক্রনিক মায়াপ্যাথির কথা বলছেন চিকিৎসকেরা তবে এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মেলেনি। তা হাতে এলে বিস্তারিতভাবে বলা সম্ভব হবে। এদিকে রাজ্য জু অথোরিটিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন – সঙ্গমের সময় মহিলাদের কোন দিকে খেয়াল রাখেন পুরুষরা?
জুয়ের গাইডলাইন মেনেই ইলেকট্রিক চুল্লির মাধ্যমে দেহটি বিনষ্টিকরন করা হবে বলে জানিয়েছেন সাফারির ডিরেক্টর। অন্যদিকে গাজলডোবা থেকে উদ্ধার বাকি ক্যাঙারু দুটি অনেকটাই সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তবে সাফারির বন্যপ্রাণ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন অত্যন্ত ২১দিন বন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি থেকে যায়। ফলে এখনই অন্য দুই ক্যাঙ্গারু সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একথা বলা ঠিক হবে না। তারা জানান মৃত ক্যাঙ্গারুটির বয়স ছিল মাত্র ৫থেকে ৬মাস। ফলে মানুষের সংস্পর্শে অত্যন্ত ভয়ভীত হয়ে পড়ে সে। যা ধীরে ধীরে জটিল সমস্যা তৈরি করে এধরনের নিরীহ জীবের ক্ষেত্রে। ক্রনিক ক্রেপচার মায়াপ্যাথি প্রাণীদেহের হৃৎযন্ত্রে আঘাত হানে। হৃৎযন্ত্রের সমস্যাতেই মৃত্যু হয়। তারা বলেন সাধারণত হরিণের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রবৃত্তি লক্ষ্য করা যায়। ক্যাঙ্গারুগুলির ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে।