সাড়ে পাঁচশ বছরের পুরানো মন্দিরের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। ভারতে তখন শেরশাহের রাজত্ব চলছে। সম্রাট শেরশাহ সেই সময়ে অর্থাৎ তার রাজত্বকালে তার সাম্রাজ্যে সমস্ত জমি জরিপ করান। সেই তার আমলেই এখন যার নাম জামালপুর সেই জামাল পুর মৌজার নামকরণ হয় রাধাবল্লভ বাটি। আর এই রাধাবল্লভবাটি নামকরণ যার নামে তিনি হচ্ছেন জামালপুরের পূজিত দেবতা শ্রী শ্রী রাধা বল্লভ জিউ জি। অনুমান করা হয় শেরশাহ এর আগেও এই রাধাবল্লব জিউ পূজিত হতেন।
অর্থাৎ যে রাধাবল্লব জিও এর কথা বলা হচ্ছে অন্তত প্রায় ৫৫০-৬০০ বছর আগে থেকেই তিনি এখানে পূজীত হতেন। রাধাবল্লব জিউ এর মন্দিরটি বয়স হয়ে গিয়েছিল প্রায় দেড় শতাধিক বছর। সেই পুরানো মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করে আজ তার প্রতিষ্ঠা করা হলো। বেলুড় মঠের একটি শাখা গুরাপ রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা আজ এসে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা এবং পূজা পাঠ করলেন।
মন্দিরের সেবায়েত, শরিকরা,গ্রামের মানুষ এবং বাইরে থেকে বিভিন্ন মানুষের সাহায্যে ও তাদের দেওয়া অনুদানে এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে বলে মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার রায় জানান। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা কে কেন্দ্র করে আজ এলাকায় সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। সকাল বেলা গ্রাম ঘুরিয়ে রাধাবল্লব জীউকে নিয়ে আসা হয় মন্দিরে। একদিকে রাধাবল্লব জিউ ছিল ষোড়শপোচারে পূজা ও প্রতিষ্ঠা,অন্যদিকে তুলসীদান, গীতা পাঠ এবং পঞ্চাঙ্গ সস্তায়ন এর ব্যবস্থা করা হয়। পূজা পাঠ ও মন্ত্র উচ্চারণে গমগম করতে থাকে মন্দির প্রাঙ্গণ। প্রতিষ্ঠা কে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষদের ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূজা দেখতে স্থানীয় মানুষজন যথেষ্ট ভিড় জমিয়েছেন মন্দির প্রাঙ্গণে।
আর ও পড়ুন সুন্দরবনে নিখোঁজ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার
প্রদীপ বাবু জানান রাধাবল্লবের ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি সংস্কার করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। সেই কারণেই তারা মন্দিরটির একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেন। রেজিস্ট্রেশন এর পরেই তারা উদ্যোগ নেন মন্দিরটিকে পুনর্নির্মাণ করার এবং সকলের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। সকলের সহযোগিতায় মূল মন্দির, নাটমন্দির,ভোগ রান্নার ঘর সহ একটি ছোটদের চিলড্রেন পার্ক এর ব্যবস্থা সমেত এই মন্দিরটি গড়ে তুলতে পারা গেছে বলে তিনি জানান। সন্ধ্যায় স্বামী নিরন্তরানন্দ মহারাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন এই মন্দিরের। সাথে বিশিষ্ট কীর্তনীয়া দলের কীর্তন পরিবেশনও হয়।