কলকাতা – দুপুরবেলার ভিড়ে গিজগিজে যদুবাবু বাজারে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর অপহরণ। বন্ধুর সঙ্গে গল্পে মগ্ন ছিলেন মধ্যবয়সী তিমিরকান্তি মজুমদার, হঠাৎই তিনজন মুখোশধারী তুলে নিয়ে গেল তাঁকে চলন্ত গাড়িতে। ঘটনার আধঘণ্টার মধ্যেই বাড়িতে আসে হোয়াটসঅ্যাপ কল— ‘‘৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না দিলে ফল ভুগতে হবে।’’
ঘটনাটি ঘটে ২৮ মে, বুধবার, কলকাতার ভবানীপুর এলাকায়। অপহৃত তিমিরবাবু দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির একটি সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। ভয় পেয়ে তাঁর স্ত্রী তাপসী মজুমদার প্রথম দফায় ১০ হাজার টাকা অনলাইনে পাঠান অপহরণকারীদের ইউপিআই আইডিতে। তবে চাপ বেড়ে চলায় শেষমেশ ৩১ মে তিনি ভবানীপুর থানায় অভিযোগ জানান।
চার ঘণ্টায় উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিস। সাউথ ডিভিশনের সাইবার সেলের সাহায্যে সেই ১০ হাজার টাকার অনলাইন লেনদেনের সূত্র ধরেই মূল অভিযুক্তের লোকেশন ট্র্যাক করে তারা। শুক্রবার রাতে সুকান্ত সেতুর কাছে টাকা নিতে এলে হাতে নাতে ধরা পড়ে অভিযুক্ত সজল বোস। তাপসীর সঙ্গে ছিলেন সাদা পোশাকে এক মহিলা পুলিসকর্মী ও একটি বিশেষ টিম।
এরপরেই যাদবপুরের সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের একটি ১২তলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত তিমিরবাবুকে। ফ্ল্যাটটি মূল অভিযুক্ত সজলের। সেখান থেকেই বাকি চার অভিযুক্ত— সুদীপ মজুমদার, সুমন বোস, সমীরকুমার দুবে এবং সন্দীপন ওরফে চিমা দাস—কে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
আদালতে পেশ, জামিনে মুক্ত
শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে শর্তসাপেক্ষে জামিন পায় পাঁচ অভিযুক্তই। তিমিরবাবুর বন্ধু যিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তিনিই প্রথমে ফোনে তাপসীকে বিষয়টি জানান। তবে প্রথমে পুলিসকে কিছু না জানিয়ে আতঙ্কে নিজের সঞ্চিত ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন তাপসী। অবশেষে পুলিসি তৎপরতায় প্রাণে রক্ষা পান তাঁর স্বামী।
