রাজ্য – বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনকে রক্ষা করা এবং দ্বীপাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জীবনমান উন্নত করা—এই দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বড়সড় উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি, একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের দাপট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সুন্দরবনের ক্রমবর্ধমান বিপদ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ক্যাবিনেট অনুমোদিত ‘সাসটেইনেবলি হার্নেসিং ওশান রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোনমি’ বা ‘শোর’ (SHORE) প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তা এবং নেদারল্যান্ডসের জলসম্পদ বিশেষজ্ঞদের প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে মঙ্গলবার সল্টলেকের কেএমডিএ অডিটোরিয়ামে প্রথম বৈঠকে বসেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। বৈঠকে রাজ্যের ১২টি দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী জানান, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোট ১১টি ব্লকের ৩৯টি জনবসতিপূর্ণ দ্বীপে বড়সড় উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। পাশাপাশি, বন দফতর জনবসতিহীন ৪৮টি দ্বীপেও সুরক্ষা ও পরিবেশ পুনর্গঠনের কাজ করবে। বিশ্বব্যাঙ্কের ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর তহবিল থেকে প্রকল্পের ৭০ শতাংশ খরচ বহন করা হবে এবং বাকি ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার।
প্রকল্পে মূল জোর থাকবে উপকূল ও নদী তটরক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তিতে টেকসই বাঁধ নির্মাণ, পরিবহন পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে। দ্বীপাঞ্চলের মানুষের জীবিকা সুরক্ষায় জলবায়ু সহনশীল কৃষি, আধুনিক মৎস্যচাষ, মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কার্যক্রম শক্তিশালী করা, তাঁদের উৎপাদিত দ্রব্য রাজ্যের বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমে বাজারে পৌঁছে দেওয়ার মতো একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সুন্দরবনের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং মানবজীবনের নিরাপত্তাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে এই প্রকল্পকে ভবিষ্যতের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার মাইলফলক বলেই মনে করছে প্রশাসন।




















