Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 170
স্কুলের টিউশন ফি বাকি, তাই বহুরূপী কৃষ্ণ জগদ্ধাত্রী পুজোয় খালি পায়ে রা...

স্কুলের টিউশন ফি বাকি, তাই বহুরূপী কৃষ্ণ জগদ্ধাত্রী পুজোয় খালি পায়ে রাস্তায় রাস্তায়

স্কুলের টিউশন ফি বাকি, তাই বহুরূপী কৃষ্ণ জগদ্ধাত্রী পুজোয় খালি পায়ে রাস্তায় রাস্তায়

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

স্কুলের টিউশন ফি বাকি, তাই বহুরূপী কৃষ্ণ জগদ্ধাত্রী পুজোয় খালি পায়ে রাস্তায় রাস্তায়। জগদ্ধাত্রী পুজোর কটা দিন খুব ব্যস্ততা। এই কদিন কৃষ্ণকে সকালে দিদার ডাকে ঘুম থেকে উঠে নয় বছরের বোন জয়াকে নিয়ে প্রতিদিন দাঁইহাট স্টেশন থেকে নবদ্বীপ হয়ে কৃষ্ণনগর আসতে হয়। কিন্তু কেন? দুই মাসের টিউশন ফি বাকি আছে যে স্কুলে। তাই এই সময় বহুরূপী সেজে বিভিন্ন জগদ্ধাত্রী প্যান্ডেলে ঘুরে বেরিয়ে তার কিছু অর্থ জোগান করার চেষ্টা ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া প্রসেনজিৎ দেবনাথের। এই কদিন সে তার দিদা রাধারানী রায়চৌধুরীর হাত ধরে প্রতিদিন ভোরবেলায় উঠে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রীর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়াতে হয় সারাদিন, দুটি পয়সা রোজগারের জন্য।

 

তার দিদাই জানায় যে স্কুলের ফাঁকে শনি রোববার ছুটির দিনে প্রসেনজিৎ বহুরূপী সেজে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। সেখানে চাল ডাল ছাড়া অর্থের জোগান সেরকম হয় না। জগদ্ধাত্রী পূজোয় প্যান্ডেলে ঘুরে ঘুরে বেড়ালে অনেকেই ভগবান কৃষ্ণ ভেবে প্রণাম করে কিছু অর্থ সাহায্যও করে কিন্তু তার জন্য প্রসেনজিৎ এর খালি পায় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়াতে হয়।

ছোট্ট প্রসেনজিৎ এর বাড়ি বর্ধমানের দাঁইহাটের ন-পাড়ায়। ছোটবেলায় মা মারা যায়। তারপর বাবা ছেড়ে চলে গেছে তখনি । তাদের এখন ঠাঁই হয়েছে দিদার বাড়িতে। মামা-মামির সঙ্গে বসবাস করে প্রসেনজিৎ ও জয়া, দুই ভাই বোন। কষ্টের সংসার। তাই বহুরূপী সেজে কিছুটা হলেও মামা-মামী, দিদাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে প্রসেনজিৎ।

 

তার দিদা রাধারানী দেবী বলেন যে, এবার তার ইচ্ছে ছিল প্রসেনজিৎকে জগদ্ধাত্রী সাজানোর। কিন্তু অর্থের অভাবে তা আর হয়ে ওঠেনি। কলকাতা থেকে কৃষ্ণ সাজার সরঞ্জাম কিনতে তাদের জেরবার অবস্থা। তবে এবারে আয় মোটামুটি হয়েছে জগদ্ধাত্রী প্যান্ডেল ঘুরে ঘুরে খালি পায়ে। মঙ্গলবার বিকেলে এরকমই এক জগদ্ধাত্রী প্যান্ডেলের সামনে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণ অর্থাৎ প্রসেনজিৎ আমাদের জানায় যে এই বছর সে একটা জ্যামিতি বক্স কিনেছে এই প্রণামীর টাকায়। জয়াও তার দাদার সাথে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়ায় দিদার হাত ধরে। বুধবার দিন জগদ্ধাত্রী পুজো কৃষ্ণনগরে। মঙ্গলবার তাই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছে দিদা-নাতি-নাতনি।

 

বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে দাঁইহাট স্টেশন। তার পর ট্রেনে চেপে নবদ্বীপ। সেখানে ঘুগনি-রুটি খেয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় বসে প্রসেনজিৎকে কৃষ্ণ সাজিয়েছেন রাধারানি। শেষে বাসে করে সোজা কৃষ্ণনগর। কৃষ্ণ ছাড়া অন্য কিছু সাজা হয় না কিশোরের। বার্ধক্য ভাতার টাকায় কৃষ্ণের সাজ কলকাতা থেকে কিনে এনেছিলেন রাধারানি।

মঙ্গলবার সকালে কৃষ্ণনগরের চাষা পাড়ায় বুড়িমা তলার ভিড়ে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এ দিক-সে দিক ঘুরে একটু বেলায় আবার বুড়িমা তলায় ফিরে আসে কৃষ্ণ। মাঝে খাওয়া বলতে কয়েক কাপ চা। এ ভাবেই দিন কাটে। বিকেল হয়। সারা দিনে কেউ প্রণাম করে। কেউ সেলফি তোলে। যার ভাল লাগে, সে কিছু অর্থসাহায্য করে।

আরও পড়ুন – রতুয়ার প্রাণকেন্দ্রে রাস্তার ধারে দিনের পর দিন বাড়ছে নোংরা আবর্জনার স্তূপ নাকে রুমাল দিয়ে করতে হচ্ছে যাতায়াত

এ দিকে, টাকার অভাবে যে দুই মাসের টিউশন ফি বাকি পড়েছে তাই নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কিশোরের দিদা বলেন, ‘‘দিদিমণি বড় ভাল। বলেছি জগদ্ধাত্রী পুজোয় ঘুরে এসে যা রোজগার হবে, তা দিয়ে ফি মিটিয়ে দেব।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের মায়ের বাড়ির দিকে সবাই বহুরূপী সাজত। আমিও ছোটবেলায় কৃষ্ণ সেজেছি।’’

দিনের শেষে এবার বহুরূপী কৃষ্ণের ফাটা খালি পায়ে ফেরার পালা। বাস ধরে কৃষ্ণ, তখন তার ছোট্ট দু’পায়ে ধুলোমাখা ব্যথা। আবার বুধবার সকালে আসতে হবে কৃষ্ণনগরে। কারণ সেদিনইতো জগদ্ধাত্রী পূজা। রোজগার হবে প্রচুর। তাই পায়ে ব্যথা নিয়েও ফিরে আসতে হবে তাকে কৃষ্ণ সেজে কৃষ্ণনগরে। পা ফাটা, ব্যথা তাতে কী? পেট বড় বালাই!

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top