রানাঘাট – বিয়ের সময় পণ নিয়েও নাকি ক্ষান্ত হয়নি পুলিস স্বামী। দাবি ছিল, আরও টাকা দিতে হবে। টাকা না দেওয়ায় তরুণী স্ত্রীকে রিভলবারের বাট এবং জুতো দিয়ে মারধরের অভিযোগ হাওড়ার বেলুড় থানায় প্রশিক্ষণরত পুলিস অফিসার(পিএসআই) বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্তের দাবি, স্ত্রী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত।প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজানো হয়েছে। আপাতত গোটা ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ধানতলা থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধানতলার বাসিন্দা বছর ২৩-এর শারমিনা খাতুনের সঙ্গে ১০মাস আগে হুগলির বাসিন্দা শেখ সাহাবুর রহমানের বিয়ে হয়। ২৭বছরের অভিযুক্ত সাহাবুর সদ্য সাব-ইন্সপেক্টর র্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছেন। এখন তিনি হাওড়া সিটি পুলিসের বেলুড় থানায় ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। শারমিনা ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রেম করে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বিয়ের সময় মোটা টাকা ও বিভিন্ন জিনিস পণ নিয়েছিলেন সাহাবুর। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বিয়ের পর থেকেই নিয়মিত শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে মারধর করা হতো। ১৯ এপ্রিল বাপেরবাড়ি এসেও শারমিনাকে বেধড়ক মারধর করে ওই পুলিস অফিসার। শারমিনা বলেন, সম্প্রতি আমি বাপের বাড়ি এসেছিলাম। আমার স্বামী একদিন সেখানে চলে আসে। আমার পরিবারের থেকে আরও ২৫ লক্ষ টাকা ও একটি চারচাকা গাড়ি চায়। আমরা দিতে পারব না বলায় প্রথমে বুট দিয়ে আমার পেটে মারে। তারপর কোমরের বেল্ট খুলে আমার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। কোমরে থাকা সার্ভিস রিভলবার দিয়ে কপালে মারে। এদিকে, ওই তরুণীকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। পাশাপাশি, ধানতলা থানায় পুলিস জামাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণীর পরিবার।
যদিও অভিযুক্ত পুলিস অফিসার সাহাবুর বলেন, আমি সদ্য চাকরি পেয়েছি। এখনও ট্রেনিং চলছে। আমি পিএসআই হিসেবে আজ করছি। আমার নামে এখনও সার্ভিস রিভলবার ইস্যুই হয়নি। তাহলে সেই সার্ভিস রিভলভার দিয়ে মারধরের অভিযোগ আসে কী করে? আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। বিয়ের আগে থেকেই মুর্শিদাবাদের এক যুবকের সঙ্গে আমার স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিয়ের পরেও দু’জনের মধ্যে সেই সম্পর্ক ছিল। আমি স্বামী হিসেবে শুধু তার প্রতিবাদ করেছিলাম। তাই ওরা পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমার স্ত্রীর দাদাও পুলিস। আমার বাবা টোটো চালান। মা ক্যান্সারের রোগী। আর বোন বিশেষভাবে সক্ষম। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে আমি। সদ্য চাকরি পেয়ে আমি কেন এই ধরনের বেআইনি কাজ করতে যাব? পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
