ট্রেনের কামরায় স্যুটকেসে বোমা সন্দেহে ব্যাপক আতঙ্ক। আসাম-শিলিগুড়ি ইন্টার সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের কামরায় স্যুটকেস বোমা সন্দেহে ব্যাপক আতঙ্ক! শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন চত্বর জুড়ে যাত্রীদের মধ্যে সৃষ্ঠি হয় চাপা আতঙ্কের বাতাবরণ। একের পর এক নিরাপত্তাহীনতার ঘটনায় প্রশ্ম চিহ্নের মুখে রেলের যাত্রী সুরক্ষা। প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাগ মুহূর্তে দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের হাই অ্যালার্ট জারির পরও প্রস্তুত ছিল না রেল!
রবিবার ছুটির আমেজের মাঝে শিলিগুড়ি প্রাচীন জংশন রেলস্টেশনে বোমাতঙ্ককে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সকাল ৯.৫৫তে জংশন স্টেশনে এসে পৌছায় আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়ি প্যাসেঞ্জার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস।যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে যাওয়ার পরই ১০.১৫নাগাদ ট্রেন কামরা সাফাইয়ের কাজ করতে গিয়ে রেল কর্মীদের নজরে আসে একটি লাল রঙের স্যুটকেস।
ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ডি তিন নম্বর কোচে যাত্রী আসনের নীচে রাখা ছিল লাল রঙের স্যুটকেসটি। যাকে কেন্দ্র করে রেল পুলিশের তরফে হইচই পড়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে বোমস্কোয়াড ও বোম্ব ডিজপোজাল টিম। তাদের উপস্থিতিতে অন্যান্য বগিগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যাওয়া হয়। মূল ট্রেন থেকে স্যুটকেস থাকা বগিটিকে বিচ্ছিন্ন করে লাইনের ওপর চলে পর্যবেক্ষণ।ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দমকল ও চিকিৎসক। ওই বগিটি থেকে নির্ধারিত দূরত্ব পর্যন্ত যাত্রী চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এভাবেই প্ল্যাটফর্মে খোলা ট্র্যাকের ওপর ঘন্টার পর ঘন্টা রাখা হয় বগিটিকে। প্রায় সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে পাওয়ার ইঞ্জিন, বোম্ব স্কোয়ার্ড ও চিকিৎসক নিয়ে গুলমার কাছে জনশূন্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় ট্রেনটিকে। নদীর চড়ে সন্ধ্যে আটটা পর্যন্ত চলে পর্যবেক্ষণ। এদিকে দীর্ঘক্ষণ বগিটিকে জংশনে লাইনের ওপর রেখে দেওয়ার জেরে গুলমার কাছে বেশকিছুক্ষণ দাঁড় করাতে হয় দিল্লি গামী মহানন্দা এক্সপ্রেসকে।
আর ও পড়ুন নেতাজীর পৈতৃক ভিটেতে পালিত হল নেতাজীর জন্মজয়ন্তী
শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন মাস্টার হেমন্ত কুমার তিওয়াড়ি জানান দুপুর ২.৫০ নাগাদ মহানন্দা এক্সপ্রেস জংশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রায় একঘন্টা দেরীতে ৩.৪০এ জংশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়া হয় ট্রেনটিকে। এদিকে ১২টি বগি নিয়ে চলা আসাম থেকে আলীপুরদুয়ার হয়ে কাটিহারগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ডি থ্রিতে পরিত্যক্ত স্যুটকেস ঘিরে বোমাতঙ্কের জেরে সংশ্লিষ্ট কামরাটি বিচ্ছিন্ন করে প্রায় ৪৫মিনিট দেরীতে ছাড়া হয় ট্রেনটিকে। তিনি জানান সুটকেসটি কামরার ভেতরে বালি চাপা অবস্থায় রয়েছে।
পাওয়ার ইঞ্জিন ও পাওয়ার চালক দিয়ে কোচটিকে শহরাঞ্চল থেকে ১০-১৫কিমি দূরে গুলমার কাছে নিয়ে গিয়ে স্যুটকেসটির পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নিষ্ক্রিয় করা হবে। অন্যদিকে রাত আটটা পর্যন্ত রেলের এসআরপি জশমিত সিং জানান প্রক্রিয়া চলছে। ওই ব্যাগে বিস্ফোরক কিছু রয়েছে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। তিনি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন একটি লাল রঙের পরিত্যক্ত ব্যাগ আমরা পেয়েছি। ব্যাগের মালিকের হদিশ মেলেনি। এসওপি মেনে রেল পুলিশ ব্যাগটিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সিআইডি বোম্ব স্কোয়ার্ড এর সঙ্গে নিষ্ক্রিয়ের কাজ করছে।