গ্রেফতার হলেন বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। অতিমারি আইন ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বিমান ঘোষকে। চার পুরসভার নির্বাচনের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিষেধ মানার কথা জানিয়েছে কমিশন। রাজ্যে ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের গ্রাফ। শনিবারও ১৮ হাজার পার করেছে দৈনিক আক্রান্ত। এই আবহেই আগামী ২২ তারিখ পুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ৪ পৌরসভায় তারমধ্যে অন্যতম চন্দননগর।
আর সেখানে কোভিড বিধি না মেনে প্রচার করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধৃত রাজ্য বিজেপির সম্পাদক তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ। রবিবাসরীয় ভোট প্রচারে চন্দননগর পুর এলাকায় এদিন প্রচারে নেমেছিল গেরুয়া শিবির। প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়কের তথা রাজ্য বিজেপির সম্পাদক বিমান ঘোষ ,হুগলি জেলা বিজেপির সভাপতি তুষার মজুমদার , জেলা বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ-সহ বিজেপি ছোট-বড় অনেক নেতাই।
চন্দননগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কোভিড বিধিকে না মেনে নির্বাচনী প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের বিরুদ্ধে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে বিধায়ক বিমান ঘোষ-সহ বাকি গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করা হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কোভিড আবহে ৫ জনের বেশি লোককে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না। কিন্তু অভিযোগ তাকে তোয়াক্কা না করে বিমান ঘোষ-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা প্রায় ১০০ দলীয় নেতা সমর্থক-কে নিয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন।
বিজেপির দলীয় নেতা-সমর্থকরা কোভিড বিধিকে না মেনে প্রচার চালাচ্ছেন, এই খবর যখন চন্দননগর থানায় পৌঁছয় তখন থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সৌমেন পালের নেতৃত্বে পুলিশের বিশাল টিম বিজেপি নেতা সমর্থকদের পথ আটকায়। ঘটনাস্থলে বিজেপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদ হয়। তারপরে একের পর এক বিজেপি নেতাকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। বিজেপি নেতাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার খবর পুলিশ স্বীকার করেছে।
পুলিশের তরফ থেকে চন্দননগর কমিশনারেটে ডিসিপি এবং চন্দননগর থানার আইসি সৌমেন পাল জানিয়েছেন, নির্বাচন আয়োগের বিধি-নির্দেশকে পুরোপুরি তোয়াক্কা না করে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন বিজেপি নেতারা। আজকের আগেও তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বারবার সতর্ক করে দেওয়ার পর কাজ না হওয়ায় পুলিশ বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে।
আর ও পড়ুন করোনায় আক্রান্ত টলিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
অপরদিকে বিজেপি বিধায়ক জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস অঙ্গুলিহেলনে পুলিশ বিজেপিকে আটকানোর জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছে। উনি দাবি করেন, পুলিশের এই আচরণ থেকে দ্বিচারিতা প্রমাণিত। এদিকে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অতিমারী আইনে উলঙ্ঘন করার অভিযোগে BJP-র রাজ্য সম্পাদক ও পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, গ্রেফতার করা হয়েছে BJP-র হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মজুমদার, BJP-র যুবমোর্চার জেলা সভাপতি সুরেশ সাউ ও চন্দননগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের BJP প্রার্থী সন্ধ্যা দেবীকেও।
তবে এই প্রথম নয়। অভিযোগ, গত ৭ জানুয়ারি বিমান ঘোষ একই ভাবে বাড়ি বাড়ি প্রচার করেছিলেন চন্দননগরের ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখান তাঁর সঙ্গে ছিলেন ২২ নম্বর ওয়ার্ডের BJP প্রার্থী মাধবী বাগ সাঁতরা এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী আশুতোষ ঘোষ। সেদিনও বিধিভঙ্গ করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল নেতাকে। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি পাঁচজনকে নিয়েই প্রচার করতে এসেছি। BJP-র সমর্থনে মানুষ স্বতস্ফূর্ত ভাবে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরাই আমার পিছন পিছন আসছেন।
এতে আমার কী করার থাকতে পারে!’ কোভিড পরিস্থিতিতে চন্দননগর, আসানসোল, বিধাননগর এবং শিলিগুড়ির পুরভোট হওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল আগেই। BJP র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও ভোট না হওয়ার পক্ষে ছিলেন। বলেছিলেন, ‘সংক্রমণ বাড়লে কী হবে?’ এরপরেই কড়া নিয়ম মেনে নির্বাচনের নির্দেশ দেয় কমিশন।