দক্ষিন 24 পরগণা – দীর্ঘ চার বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুখে হাসি ফুটল সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ মৌশুনীর মানুষের মুখে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর পর মাটির নদী বাঁধ ভেঙে বহুবার প্লাবিত হয়েছে দ্বীপটি। এবার হাইকোর্টের নির্দেশে মৌশুনী পেতে চলেছে স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র। আদালতের রায়ে স্পষ্ট, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকলে একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ও বিবেচনায় নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর মৌশুনী দ্বীপের বিপর্যস্ত চিত্র চোখে পড়ে আইনজীবী রাজেশ ক্ষেত্রীর। তিনি ওই বছর কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন। দীর্ঘ চার বছর পর বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দে দাসের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়।
আদালতের রায়ে মৌশুনীর সার্বিক উন্নয়নের দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। রায়ে বলা হয়েছে:
মৌশুনী দ্বীপে স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে,
দ্বীপে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে,
পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনায় রেখে একটি সেতু নির্মাণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হবে,
দ্বীপটির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় পাইক বলেন, “হাইকোর্টের এই রায়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। কংক্রিটের বাঁধ হলে আর নদী প্লাবন হবে না, জমির ফসল নষ্ট হবে না, মাছ ভেসে যাবে না। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলে এলাকাবাসীর চিকিৎসার সুবিধাও মিলবে।”
আইনজীবী রাজেশ ক্ষেত্রী বলেন, “এই রায় শুধু আমার নয়, মৌশুনীর মানুষের জয়। ঘূর্ণিঝড়ের পর এলাকার দুর্দশা নিজের চোখে দেখে জনস্বার্থে মামলা করেছিলাম। আজ সেই দীর্ঘ লড়াই ফলপ্রসূ হলো।”
দ্বীপবাসীরা হাইকোর্টের বিচারপতিদের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের আশা, এবার প্রকৃত উন্নয়নের পথে এগোবে মৌশুনী।
