হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা সুজয় চক্রবর্তীর, জল্পনায় সরগরম রাজনীতি

হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা সুজয় চক্রবর্তীর, জল্পনায় সরগরম রাজনীতি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



হাওড়া – হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সুজয় চক্রবর্তী। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তিনি নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে। রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সুজয়বাবু জানান, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “২৫ তারিখে দফতরের মাননীয় মন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। ইস্তফা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছি।” তিনি আরও স্পষ্ট করে দেন, “কারও নির্দেশে নয়, একান্তই ব্যক্তিগত কারণে এই পদ থেকে আপাতত সরে দাঁড়াচ্ছি।”

দায়িত্বকালে নিজের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে সুজয় চক্রবর্তী দাবি করেন, “গত চার বছরে এমন কোনও কাজ আমার দ্বারা হয়নি, যাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।” তবে এত বড় দায়িত্ব পাওয়ার পরও হঠাৎ পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর প্রতি। বলেন, “হাওড়ায় ৫-৬ লক্ষ মানুষ। দলের কাছ থেকে এই দায়িত্ব পাওয়া আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। তবে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত।”

প্রসঙ্গত, এর ঠিক একদিন আগেই হাওড়া পুরসভার ভাইস-চেয়ারপার্সন সৈকত চৌধুরী পদত্যাগ করেছিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর ওয়ার্ডে তৃণমূলের খারাপ ফলের জেরেই দল তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয় বলে শোনা যায়। তখন তাঁর দফতরই সামলাচ্ছিলেন সুজয় চক্রবর্তী। এবার তিনিও নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন।

এই পদত্যাগ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। কয়েক মাস আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ কিছু পুরসভায় চেয়ারম্যান বদল হতে পারে। সেই ইঙ্গিতের পরই হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের পদত্যাগ নতুন করে জল্পনা উস্কে দিয়েছে।

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। একুশের ভোটের আগেও তৃণমূলের বেশ কয়েকজন পদাধিকারী ইস্তফা দিয়েছিলেন। এবারও ভোটের মাত্র কয়েক মাস আগে একের পর এক পদত্যাগ কি নতুন করে দলবদলের জল্পনা উস্কে দিচ্ছে? যদিও সুজয় চক্রবর্তী দাবি করেছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, কিন্তু রাজনৈতিক মহল তা মানতে নারাজ।

দলীয় সূত্রে খবর, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই আই-প্যাক সমীক্ষা শুরু করেছে। সংগঠনের স্তরেও চলছে মূল্যায়ন। শেষ পর্যন্ত কৌশলে পরিবর্তন না হলে আগামী এক মাসের মধ্যেই ৩০ থেকে ৪০টি পুরসভায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান বদল হতে পারে।

লোকসভা ভোটে বাংলার প্রায় ৭৪টি পুরসভায় পিছিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিছু পুরসভায় ফল ছিল অত্যন্ত হতাশাজনক — যেমন শিলিগুড়ি পুরসভা, যেখানে ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২টিতেই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তাই এবার সংগঠন ঢেলে সাজাতে পুরসভা স্তর থেকেই শুরু হতে পারে বড় রদবদল।


RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top