রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী’নিয়ে ফিরলেন বাংলার বিনা পয়সার ডাক্তার। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহাকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেব খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্দননগর গ্রামে ভূমিপুত্র। ছোটবেলা থেকে অরুণোদয় মন্ডল, স্ত্রী অপর্ণা মন্ডল অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা থাকেন দমদমে।
ছোটবেলা থেকে সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষের জলে জঙ্গলে বেড়ে ওঠা অদম্য লড়াই সামনে থেকে দেখেছেন ।একদিকে চিকিৎসা অন্যদিকে বেঁচে থাকার যে কতটা সংগ্রাম দুচোখ ভরে দেখেছেন। তিনি পড়াশোনা করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন চিকিৎসক হওয়ার। বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবেন, প্রান্তিক মানুষের ও ওষুধ দেবেন। এই কাজ শুরু প্রথম শুরু করলেন ২০০০, সালে তারপর দীর্ঘ ৬, বছর পরে ২০০৬ সালে সুজন বলে একটি নিজস্ব ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংস্থা খোলেন সুজন,যার অর্থ সমাজের প্রকৃত বন্ধু।
তাই তিনি দীর্ঘ ২০, বছর ধরে প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। ২০২০, সালে পদ্মভূষণে ভূষিত হন। করণা মহামারী দীর্ঘ লকডাউন এর জের তিনি রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারেননি। চলতি মাসের ৬, ই নভেম্বর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পদ্মশ্রী পেলেন। এই পাওয়ার পরে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বললেন করোনা মহামারী একদিকে চিকিৎসা করতে গিয়ে একটু সমস্যায় পড়তে হয়েছে।তাও করে গেছেন। অন্যদিকে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে তথা, বোলপুর পশ্চিম মেদিনীপুর, মান্দারমনি, বিভিন্ন জেলায় গিয়ে একদিকে অনাথ আশ্রমের শিশুর সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা করছেন।
অন্যদিকে আগামী দিনে সুন্দরবনের সাগর কুমিরমারি ও মৌসুমী দ্বীপের আইল্যান্ড চিকিৎসা করবেন। বাংলার মানুষের কথা দেশের কাছে নাম উজ্জ্বল করবেন। অন্যদিকে বাংলার খ্যাতি ছড়িয়ে দেবেন বিদেশের মাটিতে। পদ্মশ্রী প্রাপক কে সংবর্ধিত করে গর্বিত এগিয়ে হয় বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবেন প্রতি সপ্তাহে জন্মভূমির টানে সুন্দরবনে আসেন। রোগী দেখেন, ওষুধ দেন। তিনি দু’হাজার কুড়িতে ‛পদ্ম’ পুরস্কারে ভূষিত হন। কোভিদের কারণে গত বছর পুরস্কার প্রাপকদের হাতে সম্মান হিঙ্গলগঞ্জবাসী।
তাই হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা না হ’লেও সদ্য হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত শেখ কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক শামীম বর, ইতিমধ্যেই হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দাদের কাছে আপনজন হয়ে উঠেছেন, তাঁর উদ্যোগে হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডাক্তারবাবুকে শনিবার এক অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ডাক্তারবাবুকে মহাবিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফুলের স্তবক দিয়ে স্বাগত জানান অধ্যক্ষ শেখ কামাল উদ্দিন। একে একে তাঁকে শাল, বই, মানপত্র, ধুতি-পাঞ্জাবি দিয়ে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, ছাত্রছাত্রীরা বরণ করে নেন। অরুণোদয় মন্ডল স্বভূমে সংবর্ধিত হ’তে পেরে তাঁর খুশির কথা জানান ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি নিজ লক্ষ্যে স্থির থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দেন।
আর ও পড়ুন ভারত-পাক ম্যাচে কাকে সার্পোট করেন? কী উত্তর দিলেন সানিয়া?
স্বপ্ন দেখতে বলেন। স্বামীজী, আব্দুল কালামকে উদ্ধৃত করে ছাত্রছাত্রীদের সবসময় ইতিবাচক থাকতে বলেন। ইতিমধ্যে কলেজের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠরত যে দশজন ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে এদিন তাদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন ‛পদ্মশ্রী’ প্রাপক ডাক্তার অরুণোদয় মন্ডল। কলেজের অধ্যক্ষ জানান, ডাক্তারবাবুর হাতে সামান্য উপহার তুলে দিতে পেরে তারা নিজেরাই ধন্য।
ডাক্তারবাবু কলেজের ছাত্রছাত্রীদের লেখায়-চিত্রে সজ্জিত দেওয়াল পত্রিকা ‛আলো’র উন্মোচনও করেন। এই অনুষ্ঠানে আমরা হ থেকেও ডাক্তারবাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অন্যান্যদের মধ্যে এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী শ্রাবণী ঘোষ, প্রশান্ত চক্রবর্তীসহ বিশিষ্ট জনেরা।