পশ্চিমবঙে বিজেপি হারবে কেন, তার ১৩ কার

পশ্চিমবঙে বিজেপি হারবে কেন, তার ১৩ কার

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

পশ্চিমবঙে বিজেপি হারবে কেন, তার ১৩ কার। আগুনে পুড়ে রান্না করা মহিলারা এবার গ্যাসের দরের আগুনে পুড়ছেন তাই ভোট দেননি। পেট্রোল পেট্রলবোমার কাজ করেছে। যার গাড়ি আছে তার কপালে চিন্তার ভাজ তেলের বাজেট নিয়ে। সব্জী থেকে ডাল সবকিছুই তেলের জন্য। ডিজেল পেট্রল অগ্নি মূল্য। বাইক গাড়ি রাখা দায় হয়ে পড়েছে। সরিষার তেল তরতর করে বেড়েছে যার ফলে মানুষ তেলদেবার গালিও ভুলে গেছে।

 

সম্ভবত মানুষের ক্ষোভের এই কারণগুলো সব কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে প্রচারে পুশ করে ব্যাপকহারে লোক খ্যাপানোর কাজটা করতে সফল হয়েছে তৃণমূল।
মুসলিম সমর্থনের আশায় সি এ এ কে পেছিয়ে দেওয়ায় বাঙাল ভোট বিজেপিকে কাঙ্গাল করে এন ব্লক দিদির পক্ষে চলে গিয়েছে।

 

সিএএ র নিয়মাবলি এখনো করে উঠতে পারেনি। এখানেই অবিশ্বাস্যের কারণ হয়ে ওঠে। মতুয়ারা বহু আন্দোলন করেও এটি পায়নি। সঙ্গে আসামে ডিটেনশন ক্যাম্পে হিন্দুদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছয়লাপ। সেই ছবি দেখে আঁতকে ওঠেন মতুয়াসহ ১৯৭১ মার্চের পরে আসা বাঙালিরা। তৃণমূল এই প্রচার কাজে লাগিয়ে কিস্তামাত করে যে এই সরকার থাকলে নাগরিকত্বের কোন প্রয়োজন নেই। আর বিজেপি আসলে আসামের মত ডিটেনশন ক্যাম্প পেতে হবে।

 

হাসনাবাদের একজন বললেন যে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে লোকসভায় ৪৫০০ ভোট লিড পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে এবার লিড মাত্র ৫০০ ভোট। এভাবেই বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলাতেও
তবুও বিজেপি দীর্ঘদিন যাবৎ পশ্চিমবঙ্গে একটি অবাঙালী সত্বা জাগিয়ে রেখেছিল। সেই সত্বাকে অনেকাংশে কলকাতা নিয়ন্ত্রণ করত। এবার তা হয়নি। এবার বাংলার ভোটার নেপালী, গোর্খা, লেপচা, রাজবংশী, নস্যশেখ, মতুয়া, নমঃশূদ্র, ক কুর্মি, আদিবাসী, শেরশাহবাদী, বাঙালী, এরকম বহুত্ববাদের বেড়াজালে কলকাতার আবেদন সর্বজনীন হয়ে। এতে তৃণমূল অপেক্ষা বিজেপি বেশী ফায়দা তুলতে সক্ষম হবে বলে আশা করা গেলেও কার্যত তা হয়নি।

 

তাহলে কি বিজেপিকে মানুষ রিজেক্ট করেছে? না তা নয়। দিলিপ ঘোষ বলেছেন ২৬ গুণ বেশী তাদের আসন লাভ। ৩টি থেকে আসন একলাফে বেড়ে হয়েছে ৭৬ টি যদিও ভোট শতাংশ কমেছে ২ শতাংশের বেশী। আর একটা লাভ কংগ্রেস ও কমুনিষ্ট দুই প্রধান প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেই জয় এসেছে বিজেপির। ইতিহাস সৃষ্টি করে এই দুটি সবথেকে পুরনো দল শূন্য হয়ে গেছে। এর কৃতিত্ব আংশিক শাসক দল তৃণমূলের। ওদের দেখানো রাস্তায় ভোট করে এখন ওদের অস্তিত্ব অস্তিমত। কেরলে কমিউনিস্ট এখনো বহাল। জিতল পরপর দুবার। সেখানে চৌত্রিশ বছর থাকার জন্য বৈজ্ঞানিক ছাপ্পার আবিষ্কার করতে হয়নি।

 

একবার হার তো পরের বার জিত। শাসন ব্যবস্থা দলের হাতে চলে যায়নি। পুলিশ দলদাস হয়ে যায় নি। আইন আদালত চলে নিজের পথে। তাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নেই। করোনাতে ভাল কাজ করেছে বাম সরকার। অথচ বাংলায় ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে বাংলার সংসদীয় গনতন্ত্রের এতবড় ক্ষতি করে গেছে বামেরা যা এখনো স্বীকার করছে না। আবার ক্ষমতায় আসতে চৌত্রিশ বছরের বেশী লাগতে পারে। কেননা মানুষ তাদের অস্তাকুঁড়েতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আই এস এফ, একটি নতুন দল জন্ম নিয়েই একটি আসন জয়লাভ করল।

আরও পড়ুন – আর্সেনিকমুক্ত জল তৈরিতে ‘পেটেন্ট’ পেলেন রায়গঞ্জের অধ্যাপক স্পন্দন ঘোষ

আর শতবর্ষ পুরনো দল শেষ হতে হতে শূন্যে পরিণত হল। বড় করে এই ইতিহাস লেখা হয়ে গেল। মুসলিম ভোট নির্ভর দল দুটি চূড়ান্তভাবে ক্ষতির মুখে পড়ল।
একটা কথাই বলা যায় ‘ভগবান ভরসা’। আর লড়াই এমন একটি দলের বিরুদ্ধে যারা একের পর এক পরিকল্পনা নিয়েছে ভোটারের কাছে পৌছাতে। দুয়ারে সরকারকে যারা যমের দুয়ারে সরকার বলে ব্যঙ্গ করেছেন তারা এই প্রকল্পের গভীরতা মাপতে পুরোপুরি ব্যর্থ।

 

টাকা দিয়ে নির্বাচন পরিকল্পক রেখেছে একটি দল যাদের হাতে সরকার থাকা সত্বেও সেই দলকে নিয়ে আর যাহোক হাসিঠাট্টা করা চলেনা। তিনবার বিয়ে নিয়ে ট্রৌল হওয়া সেলিব্রিটিকে কেন প্রার্থী করা হল একজন বরিষ্ঠ মন্ত্রী ও দলের প্রথমসারির নেতার বিরুদ্ধে। তাহলে শোভন বৈশাখী কী দোষ করল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তো এগোন যেত। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ঠিক সময়ে করতে ব্যর্থ।
তবে পাল্টা কথাও শোনা গেল খোদ মমতা ব্যানার্জীর মুখে, ভারতকে বাচিয়ে দিল বাংলা। এর রাজনৈতিক ব্যাখ্যা অনেক রকম হতে পারে।

 

সিবিআই, ইডি কে এই রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করেনা। কারণ এতগুলি মামলায় কোন চার্জশিট দিতে পারেনি আট বছরে। ঘরের বউদের নিয়ে টানাটানি ভাল চোখে নেয়নি জনসাধারণ। বীরভুমের এক সাংবাদিক বন্ধু কাম তৃণমূল সমর্থক সিদ্ধার্থ বললেন সংখ্যা লঘুরা মমতাদিকে বিজেপি যেভাবে বেগম বলে ঠাট্টা মস্করা করেছে তা মুসলিমরা ভাল চোখে নেয়নি। বেগম তাদের ঘরের মেয়েদের বলা হয়। তাদের অপমান করা হয়েছে।
কে দায়িত্ব নেবে ছজন মানুষ যারা মারা গেল। মায়ের কোল খালি হল। শোভারানি, উত্তম ঘোষ, হারান অধিকারী, মানিক মৈত্র, আই এস এফ কর্মীর হাসানুজ্জামানের মৃত্যু হয়েছে। এই দায় কে নেবে। কে …

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top