রাজ্য – প্রতিটি হাসপাতালে রয়েছে অভিযোগ জানানোর বাক্স। কিন্তু সেগুলি খুলেও দেখা হয় না বলে অভিযোগ। আবার কোথাও কোথাও অভিযোগ বক্সগুলি এমনভাবে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা হয় যে তাতে কারও চোখে পড়ে না। ফলে অভিযোগ থাকলেও তা জমা পড়ে না সংশ্লিষ্ট বাক্সে।
সূত্রের খবর, এবার থেকে প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য একাধিক বাক্স রাখা হবে।সেগুলি নিয়মিত তদারকিও করতে হবে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতর থেকে জেলায় জেলায় এমনই নির্দেশ গিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, অনেক সময় চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ডিউটি না করার অভিযোগ ওঠে। একইভাবে সরকারি হাসপাতালে এসেও রক্ত থেকে শুরু করে বেড পাওয়ার জন্য দালালদের খপ্পরে পড়ে মোটা টাকা ব্যয় করতে হয় রোগী ও তাদের পরিজনদের। এর ফলে একদিকে যেমন রোগীর পরিবারকে হয়রানি শিকার হতে হয় তেমনই বদনাম হয় সরকারেরও।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, ২৬ এর ভোটের আগে এই রোজনামচায় বদল আনতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকদের ৮ ঘণ্টা ডিউটির কথা। এও বলেছেন, “দায়িত্বের প্রশ্নে কাউকে রেয়াত নয়।”সূত্রের দাবি, এহেন তৎপরতার নেপথ্যে রয়েছে হাসপাতালে হাসপাতালে অদৃশ্যভাবে চলতে থাকা ‘দালাল রাজ’। যা সমূলে নির্মুল করতে চাইছে সরকার।
সম্প্রতি কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে বেড পেতে রোগীর পরিজনকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। আবার এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। দমদমে পুরসভা নিয়ন্ত্রিত একটি হাসপাতালে প্রসূতির ডেলিভারি করার জন্য রোগীকে নিজের পছন্দ মতো নার্সিংহোমে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন এক চিকিৎসক।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “এগুলো কোনওটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এরকমই ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যেকটির তদন্ত হওয়া জরুরি। তবেই কাজ হবে। সেজন্যই অভিযোগের বাক্সগুলি এবার থেকে নিয়মিত খোলার ব্যবস্থা করা হবে।”
