ত্রিপুরা – মণিপুর সফরে এসে বিশ্বের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার নেপথ্যে হিন্দু সমাজের ভূমিকা নিয়ে জোরালো বার্তা দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর দাবি, হিন্দু সমাজ অমর—আর ভারত সেই অমর সভ্যতার নামই। তাঁর কথায়, “হিন্দুরা না থাকলে পৃথিবীও থাকবে না।” সভ্যতার উত্থান-পতন এবং ভারতীয় ধারার স্থায়িত্বের উদাহরণ টেনে ভাগবত বলেন, গ্রীস, মিসর, রোম—প্রাচীন সভ্যতাগুলি ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে গেলেও ভারতীয় সভ্যতা আজও অটুট। এর পিছনে ভারতের অন্তর্নিহিত সাংস্কৃতিক শক্তিকেই দায়ী করেন তিনি।
জাতপাত, ভাষা বা ধর্ম নির্বিশেষে দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক সমন্বয়ই ভারতের আসল শক্তি বলে উল্লেখ করেন আরএসএস প্রধান। তাঁর মতে, এই সমাজবুনোটই হিন্দু সমাজকে চিরকাল টিকিয়ে রাখবে। তিনি আরও বলেন, হিন্দু সমাজের অস্তিত্ব শেষ হলে পৃথিবীর অস্তিত্বও বিপন্ন হবে। একই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন, ভারতীয় মুসলিম ও খ্রিস্টানরাও এই মাটিরই সন্তান, তাই কোনও ভারতবাসীকে ‘অহিন্দু’ বলা যায় না—আগেও বহুবার তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
জাতিগঠনে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, সামরিক দক্ষতা এবং জ্ঞান-ক্ষমতার গুরুত্ব নিয়েও বক্তব্য রাখেন ভাগবত। তাঁর মতে, জাতির প্রথম শর্ত শক্তি, আর সেই শক্তির ভিত্তি অর্থনৈতিক সক্ষমতা। স্বনির্ভরতা মানে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি নয়; বরং এমন অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করা, যাতে কোনও দেশ বহির্ভরশীল না থাকে। পাশাপাশি তিনি বলেন, শুধু অর্থনীতি নয়—সামরিক শক্তি, প্রযুক্তি ও জ্ঞান দেশকে শক্তিশালী করার অপরিহার্য উপাদান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভারতীয় রফতানির উপর প্রায় ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে তাঁর ‘স্বদেশি’ বার্তা আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তাঁর বক্তব্য সরকারের দেশীয় উৎপাদনমুখী নীতিকে পরোক্ষভাবে সমর্থনই করে।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সভ্যতার ধারাবাহিকতা, জাতীয় শক্তি ও সামাজিক সংহতির কথা তুলে ধরে মোহন ভাগবতের এই বক্তব্যকে বিশেষজ্ঞরা মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।




















