মালদা: আজকের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে ১০ টাকায় ঠিকমতো এক কাপ চাও মেলে না, অথচ মালদার ইংরেজবাজারের যুবক সুশান্ত মন্ডল মাত্র দশ টাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের দিচ্ছেন ছয় পিস মুচমুচে সিঙ্গারা। প্রতিদিন নয়মৌজা হাইস্কুলের সামনে তাঁর ঠেলাগাড়ি ঘিরে ভিড় জমছে টিফিন টাইম থেকে ছুটির ঘণ্টা অবধি। মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায় এক হাজার দু’শো থেকে দেড় হাজার সিঙ্গারা!
আকৃতিতে ছোট হলেও সিঙ্গারাগুলি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিমাণে তৃপ্তিকর। কাগজের প্লেটে ছয়টি সিঙ্গারার উপর ছড়ানো টমেটো সস, সঙ্গে কাঠের চামচ—এইভাবেই পরিবেশিত হয় সুশান্তর তৈরি চা-সঙ্গী। তাঁর দাবি, এই দরেও লাভ করা সম্ভব, আর সেই লাভেই চলছে তাঁর সংসার ও ছেলের পড়াশোনা।
ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুঘাট এলাকার বাসিন্দা সুশান্ত, বাবা-মাকে ছোটবেলাতেই হারিয়ে পিসির বাড়িতে মানুষ হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী পায়েল সাহা মন্ডল ও এক প্রাথমিক স্কুলপড়ুয়া ছেলে অর্ণবকে নিয়ে তাঁর ছোট্ট সংসার। নিজের ভিটেমাটি নেই, কিন্তু স্বপ্ন দেখেন ঘুরে দাঁড়ানোর।
সুশান্তর কথায়, “দু’ বছর আগে বাইরে থেকে এই বিক্রির পদ্ধতিটা শিখেছিলাম। তারপর নিজের মতো করে শুরু করি। ভোর থেকে তৈরি শুরু হয়। বাড়ির লোকজনই আমার সঙ্গী। তারপর ঠেলাগাড়িতে করে নয়মৌজা হাইস্কুলের সামনে হাজির হই। বাচ্চাদের মুখের হাসিই আমার প্রাপ্তি।”
কোনও কোনও দিন চাহিদা পৌঁছয় ২০০০ পিসে। সীমিত সময়ের এই বিক্রির মধ্যেই সুশান্ত হয়ে উঠেছেন ইংরেজবাজারের পরিচিত মুখ। একদিকে স্বাদ, অন্যদিকে মূল্যবোধ—দু’য়ের অসাধারণ সমন্বয় ঘটিয়ে মালদার খাদ্য সংস্কৃতিতে এক নতুন পরিচয় গড়ে তুলেছেন তিনি।
