দিল্লি – বধূ নির্যাতনের মামলা করলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার নয়—এবার সেই বার্তাই স্পষ্টভাবে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এলাহাবাদ হাইকোর্টের ২০২২ সালের নির্দেশিকাকে বহাল রেখেই মঙ্গলবার ‘আস্থা’ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি এজি মাসিহর বেঞ্চ জানিয়ে দিল, ৪৯৮-এ ধারার অপব্যবহার রোধে হাইকোর্ট যে নীতিমালার কথা বলেছে, সেটাই এখন থেকে পুলিশ ও প্রশাসনকে মেনে চলতে হবে।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ৪৯৮-এ ধারায় দায়ের হওয়া বহু মামলাই ‘আক্রোশ মেটানোর হাতিয়ার’ হয়ে উঠছে। তাই শুধুমাত্র অভিযোগ উঠলেই যেন অভিযুক্ত ও তার পরিবারকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার না করা হয়, সেই দিকেই নজর দিতে হবে।
২০১৭ সালের একটি মামলায় একই ধরনের নির্দেশিকা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, যদিও ২০১৮ সালে সেই নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ এসেছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্টের ২০২২ সালের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফের সেই নীতিই ফিরে এল বলে মনে করছেন আইনি মহল।
তবে হাইকোর্ট ঠিক কী বলেছিল? নির্দেশিকায় বলা হয়, ৪৯৮-এ ধারায় FIR দায়েরের পরে পুলিশকে বাধ্যতামূলকভাবে ২ মাসের ‘কুলিং পিরিয়ড’ মেনে চলতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কোনও গ্রেফতারি নয়। সেই সময়ে অভিযোগপত্র সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে পারিবারিক কল্যাণ কমিটি (FWC)-র কাছে পাঠানো হবে।
তবে সব মামলাই নয়—শুধু সেইসব মামলাই FWC-তে পাঠানো হবে যেখানে অভিযোগকারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই এবং অভিযোগে যেসব ধারার সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের কম।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে যে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে এসেছিল, তাতে দেখা যায়, এক মহিলা নিজের স্বামী ও শ্বশুরকে ‘আক্রোশে’ প্রায় ১০০ দিনের বেশি জেল খাটাতে বাধ্য করেন। এই মামলাতেই আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দেন এবং বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
এই রায়ের ফলে একদিকে যেমন ৪৯৮-এ ধারার অপব্যবহার রোধে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল, তেমনই অন্যদিকে প্রকৃত নির্যাতনের শিকারদের ক্ষেত্রেও ন্যায়ের সুযোগ অক্ষুণ্ণ রাখার বার্তা দিল শীর্ষ আদালত।
