মুম্বাই – পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাংকের প্রাক্তন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৫২.৯৯ কোটি টাকার একটি বড়সড় ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগে দেশজুড়ে নড়েচড়ে বসেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ), ২০০২-এর আওতায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সম্প্রতি মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুর সাতটি স্থানে অভিযান চালায়। এই কেলেঙ্কারিতে অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্ম GOA247.live-এর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গিয়েছে।
অভিযান চলাকালীন উদ্ধার হয়েছে নগদ ৩৯ লক্ষ টাকা, বেশ কিছু মোবাইল ফোন, অনলাইন গেমিংয়ে ব্যবহৃত সিম কার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল ও নথিগত তথ্যপ্রমাণ। এছাড়াও ৪৮টি ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ১.৫ কোটি টাকা ফ্রিজ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, এই অ্যাকাউন্টগুলি অনলাইন গেমিং-এর নামে অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
প্রাক্তন ব্যাংক কর্মকর্তা বেদনশু শেখর মিশ্র মূল অভিযুক্ত
এই মামলার সূত্রপাত হয়েছিল সিবিআই-এর অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চ, নয়াদিল্লি দ্বারা দায়ের করা একটি এফআইআর থেকে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাংকের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের খালসা কলেজ শাখার প্রাক্তন কর্মকর্তা বেদনশু শেখর মিশ্রের নাম। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি, দুর্নীতি দমন আইন এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের অধীনে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইডি জানিয়েছে, মিশ্র তার পদমর্যাদার অপব্যবহার করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রী গুরু তেগ বাহাদুর খালসা কলেজের নামে ৪৬টি ভুয়া ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। এই অর্থের পরিমাণ আনুমানিক ৫২.৯৯ কোটি টাকা।
অনলাইন গেমিং-এ ২৪ কোটি টাকার লেনদেন
তদন্তে উঠে এসেছে, আত্মসাৎ করা অর্থের প্রায় ২৪ কোটি টাকা বিভিন্ন অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করা হয়, যার মধ্যে অন্যতম GOA247.live। অর্থ পাচারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টের এক বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে মূল উৎস গোপন রাখা হয়।
এর আগে, ইডি এই মামলায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে ২.৫৬ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তিও সাময়িকভাবে জব্দ করেছিল। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল মানি লন্ডারিং আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী।
প্রবর্তন অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই মামলায় জড়িত বাকি অবৈধ অর্থের খোঁজে তদন্ত চলছে। পাশাপাশি, কীভাবে অনলাইন জুয়া এবং আর্থিক জালিয়াতির মধ্যে গভীর নেটওয়ার্ক কাজ করে, তা জানার চেষ্টা করছে তারা।
