৭৯ দিন পর প্রকাশিত হল ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল, মেধা তালিকায় স্থান পেল ১১৪ জন। দুবছর করোনা কালে ব্যাহত হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা। তবে করোনা প্রকোপ কমতেই ২০২২ সালে ফের স্বমহিমায় ফেরে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কভিড বিধি মেনে রাজ্যের স্কুল গুলিতে নেওয়া হয় চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫ জন। করোনা প্রকোপে বিগত দুবছর পরীক্ষা না হয়ে ১০০ শতাংশ ছাত্র ছাত্রীকে পাশ করানো হয় ফলে এই বছর অফলাইনে পরীক্ষা হতেই বাড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। প্রায় ৫০ হাজার বেড়ে রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী হয় এই বছর।
যার মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৯০৭জন। সেখানে ৬ লক্ষ ৯ হাজার ৮৬৮ জন ছাত্রী। আজ সকাল ১০টা থেকে পর্ষদের ওয়েবসাইটে মিলবে ফল। এছাড়াও এসএমএস এর মাধ্যমেও ফল দেখতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। ফল দেখা যাবে wbresults.nic.in এ। রাজ্যের মোট ৪ হাজার ১৯২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছিল। ৭ মার্চ থেকে শুরু হয় ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয় ১৬ তারিখ। ৭৯ দিনের মাথায় পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলো রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯লক্ষ ৪৯ হাজার ৯২৭জন। পাশের হার ৮৬.৬০ শতাংশ। যার মধ্যে ছেলেদের পাশের হার ৮৮.৫৯ শতাংশ এবং মেয়েদের পাশের হার ৮৫ শতাংশ। মোট ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ১৫০জন ছাত্র এবং ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৭১৮ জন ছাত্রী চলতি বছর পাস করেছে। পাশের হারে জেলা স্তরে এগিয়ে পূর্ব মেদনীপুর, ৯৭.৬৩ শতাংশ ছাত্র ছাত্রী পাস করেছে পূর্ব মেদিনীপুর এলাকা থেকে। এছাড়াও পশ্চিম মেদনীপুর ৯৪.৬২ শতাংশ, কালিম্পং ৯৪.৭১ শতাংশ, কলকাতা ৯৪.৩৬ শতাংশ, ঝাড়গ্রাম ৯২.০৭ শতাংশ এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ৯১.৯৮ শতাংশ পাশ করেছে।
শুক্রবার রাজ্যের ৪৯টি ক্যাম্প অফিস থেকে মার্কশিট দেওয়া হবে। এছাড়াও আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে আগামী বছরের পরীক্ষার দিন ঘোষনা করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গাঙ্গুলি। ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ভাষার পরীক্ষা দিয়ে। ২৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। ২৫ ফেব্রুয়ারি ভূগোল, ২৭ ফেব্রুয়ারি ইতিহাস, ২৮ ফেব্রুয়ারি জীবন বিজ্ঞান, ২ মার্চ অঙ্ক, ৩ মার্চ ভৌত বিজ্ঞান এবং ৪ মার্চ অপশনাল ইলেকট্রিক সাবজেক্টের পরীক্ষা দিয়ে শেষ হবে ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা।
আরও পড়ুন – আফ্রিকায় চলতি বছরে কোভিডে মৃত্যু কমছে ৯৪ শতাংশ
চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় নাম নতিভুক্ত করেছেন ১১৪ জন। ২০২২ সালে রাজ্যে ৯৯ শতাংশ নম্বর নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন দুজন। বাঁকুড়া জেলার রাম হরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন হাই স্কুলের অর্ণব ঘরাই এবং বর্ধমান সি এম এস হাইস্কুলের রৌনক মন্ডল। দুজনেরই সংগ্রহে ৬৯৩ নম্বর। দ্বিতীয় স্থানেও রয়েছে দুজন। মালদার আদর্শবানি একাডেমির ছাত্রী কৌশিকী সরকার। যিনি রাজ্যে মহিলাদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এবং ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাই স্কুলের রৌনক মন্ডল। দুজনেরই সংগ্রহে রয়েছে ৬৯২ নম্বর। রাজ্যের তৃতীয় স্থানে ৬৯১ নম্বর নিয়ে রয়েছেন দুই ছাত্রী।
আসানসোলের উমারানি গড়াই মহিলা কল্যান গার্লস হাই স্কুলের অনন্যা দাশগুপ্ত এবং পূর্ব মেদিনীপুরের চরেপালিয়া শ্রী শ্রী বাসন্তী বিদ্যাপীঠের দেবশিখা প্রধান। রাজ্যে ৬৯০ নম্বর নিয়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন ৪ জন। ৬৮৯ নম্বর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ১১ জন ছাত্র ছাত্রী। ৬৮৮ নম্বর নিয়ে ষষ্ঠ হয়েছে ৬জন। সপ্তম স্থানে ৬৮৭ নম্বর নিয়ে রয়েছেন ১০ জন। অষ্টম স্থানে রয়েছে ২২ জন যাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। নবম স্থান পেয়েছে ১৫ জন যাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫। মেধা তালিকার সর্বশেষে ৬৮৪ নম্বর নিয়ে দশম স্থান অধিকার করেছেন ৪০জন।