
কাল বাদে পরিদিন স্বাধীনতা দিবস। দেশজুড়ে এখন 15 August স্বাধীনতা দিবস পালনে তোড়জোড় চলছে জোরকদমে। দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস আর দেশর ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক উদযাপনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেশবাসী। ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে এই ১৫ অগাস্ট আমাদের ভারত ভূমি স্বাধীন হয়েছিল এবং এইদিনই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অগণিত আত্মত্যাগের কথাও স্মরণ করা হয়।
প্রত্যেক বছর 15 August অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে দেশে পালন করা হয় এবং এই উপলক্ষ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় তিরঙ্গা বা দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দেশের এই জাতীয় পতাকা ভারতবাসীর অহংকার এবং আশা ও আকাঙ্খার প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এই জাতীয় পতাকা নিয়ে বলেছিলেন, ‘এই পতাকা আমাদের শুধু স্বাধীনতার নয় সব মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক।’ জেনে নিন জাতীয় পতাকা সম্পর্কে কিছু দারুণ তথ্য।
আমাদের দেশের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকার নকশা তৈরি করেছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া, যিনি অন্ধ্র প্রদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। ২২ জুলাই ১৯৪৭ সালে 15 August ভারতের স্বাধীনতা পাওয়ার একদিন আগে ভারতীয় পতাকা গৃহীত হয়। ভারতের জাতীয় পতাকা প্রথমবার ১৯০৬ সালের ৭ অগাস্ট কলকাতার পার্সি বাগান স্কোয়ারে উত্তোলন হয়।
আর ও পড়ুন Metro চলাচলের সময়সীমা বাড়লো কলকাতায়, খুশী Metro যাত্রীরা
সেই সময় এই পতাকায় উপরে, মধ্যে ও নিচে যথাক্রমে লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের তিনটি আনুভূমিক ডোরা ছিল আমাদের দেশের নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পতাকা খাদি কাপড়ে তৈরি করতে হয়। এই খাদি কাপড় আসলে এক বিশেষ ধরনের হস্তচালিত তাঁত দিয়ে তৈরি হয়। এবং এই খাদি কাপড়ের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যই জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
বর্তমানে জাতীয় পতাকার আসল কাপড় তৈরি করা হয় একটি মাত্র জায়গায় তা হল কর্নাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘে বা কেকেজিএসএস। একমাত্র এরাই ভারতের একমাত্র লাইসেন্স-প্রাপ্ত জাতীয় পতাকা উৎপাদন ও সরবরাহ ইউনিট। বর্তমানে জাতীয় পতাকার গেরুয়া রঙ ত্যাগ ও বৈরাগ্যের প্রতীক, সাদা রঙ সত্য, শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক।
পতাকার সবুজ রঙ সমৃদ্ধি নির্দেশ করে এবং অশোক চক্র ধর্ম অনুশাসনের প্রতীক। পরবর্তীকালে পতাকার মাঝে সাদা অংশে ২৪টি নীল রঙের দণ্ডযুক্ত অশোকচক্র স্থান পায়।বিদেশের মাটিতে প্রথম এই দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভিকাজি রুস্তম কামা। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে পর্বতারোহী তেনজিং নোরগে প্রথমবার মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় তিরঙ্গা লাগান।
২০০২ সালের আগে পর্যন্ত ভারতের সাধারণ নাগরিক স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবস ব্যাতীত অন্য কোনও দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনে অনুমতি ছিল না। ২০০২ সালে, সুপ্রিম কোর্ট পতাকা জাতীয় পতাকাবিধি সংস্করণ করে এবং তাকাবিধি অনুযায়ী মর্যাদা, গৌরব ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে যে কোনো নাগরিক বছরের যে কোনো দিনই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারেন।
পতাকাবিধি অনুযায়ী, সকালের দিকে পতাকা উত্তোলন করতে হবে এবং সেখানে অন্য কোনও পতাকা বা প্রতীক থাকবে না। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারি ভবনে রাতেও জাতীয় পতাকা উড্ডয়নের রীতি আছে। জাতীয় পতাকা কখনই মাটি বা জল স্পর্শ করবে না এবং কখনও উল্টো করে রাখা হবে না।