জামাইষষ্ঠীর লুচি কাছে এলেও খাওয়া হল না জীবনকৃষ্ণের, আলিপুর আদালতে বৃহস্পতিবার সশরীরে হাজির করানো হয়েছিল ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত তিনি। জামাইষষ্ঠীর দিন জীবনকৃষ্ণের জন্য বাড়ি থেকে খাবার এবং প্রসাদ নিয়ে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু সেই খাবার তৃণমূল বিধায়ককে দেওয়ার অনুমতি দিল না পুলিশ।
বিধায়কের দু’টি নোটপ্যাডও বাজেয়াপ্ত করা হয়। সিবিআইয়ের সূত্রে খবর, বাড়ির একটি ঘরকেই নিয়োগ দুর্নীতির আস্তানা বানিয়ে রেখেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। সেই ঘরকে ‘ওয়ার রুম’ বলছেন তদন্তকারীরা। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঘরটিতে একাধিক কম্পিউটার, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, তিনটি নোটপ্যাড, হাই স্পিড ইন্টারনেট সংযোগ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফ্টঅয়্যারের খোঁজ পাওয়া যায়। কী কাজে এই ঘর ব্যবহার হত, সে বিষয়ে বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত ১৭ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার আগে ৬৫ ঘণ্টা তাঁর দফতর-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে প্রাথমিক ভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জীবনকৃষ্ণের দফতর এবং অন্যান্য জায়গায় তল্লাশি চলাকালীন, বড়ঞার বিধায়কের বাড়ি থেকে তাঁর সুপারিশে হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নথির পাশাপাশি এসএলএসটির গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার ‘ডেটাবেস’ পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দু’বস্তা নথি। সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করছে, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে প্রায় ৩,৪০০ প্রার্থীর তথ্য উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে নাকি রয়েছে নবম এবং দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং রোল নম্বর সমেত বহু নথি।
আরও পড়ুন – বালি ব্রিজের উপর পড়ে থাকা বেওয়ারিশ ব্যাগ-জুতো নিয়ে বাড়ছে রহস্য
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার জীবনকৃষ্ণকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত সিজিএমের এজলাসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরা বাড়ি থেকে জীবনকৃষ্ণের জন্য লুচি, প্রসাদ এবং গোটা ফল এনেছিলেন। অনেকে মনে করছেন, ষষ্ঠীপুজোর প্রসাদ এনেছিলেন তাঁরা। সেই খাবার জীবনকৃষ্ণকে দেওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী, এ ভাবে কোনও খাবার বন্দিকে দেওয়ার অনুমতি নেই।