মনোনয়ন প্রত্যাহারে ‘চাপ’?জেলাশাসকদের চিঠি কমিশনের, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেও কেউ যদি তা প্রত্যাহার করে নিতে চান, তবে তার উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে। সোমবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছে কমিশন। প্রত্যেক প্রার্থীকেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য কারণ দর্শাতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের নানা প্রান্তে জোর করে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই আবহেই কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিল কমিশন।
ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির অভিযোগ আসতে শুরু করেছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে। এ বিষয়ে প্রথম দিন থেকে শীর্ষে ছিল মুর্শিদাবাদ। ওই জেলার খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে চাপান-উতোর চলছে। মুর্শিদাবাদে বেশ কিছু তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে সুতি এবং হরিহরপাড়া থেকে। রবিবার রাতে কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায়। এ ছাড়া, সোমবার সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে শাসকদলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। যদিও প্রতিটি ক্ষেত্রেই তা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।
এই অবস্থায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং জেলাশাসক বা কমিশনের সদর দফতরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপি। আদালত জানিয়েছে, মনোনয়ন পেশে বাধা দেওয়া এবং নিরাপত্তার বিষয়টি কমিশনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তার পরেই জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে নতুন নির্দেশ দিল কমিশন।
শুক্র ও শনি মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে বিজেপি। সেই তালিকায় সিপিএম ও কংগ্রেসের পরে রয়েছে তৃণমূল। যদিও শাসকদলের বক্তব্য, তারা মনোনয়ন জমা দেবে সোমবার থেকে। দু’দিন ধরে তারই প্রস্তুতি চলেছে।
আরও পড়ুন – ভোট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বাংলায় পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
গত ৯ জুন থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ। চলবে ১৫ জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ, রবিবার ছুটির দিন বাদ দিলে মনোনয়ন পেশের জন্য ৬ দিন সময় দিয়েছে কমিশন। আগামী ৮ জুলাই এক দফায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাকারীরা হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং এক আইনজীবী। সোমবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য বিজেপি ন্যূনতম ১২ দিন সময় দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।