অভিষেককে রাজ্য সভাপতি করার প্রস্তাব সুব্রত বক্সীর, কী বললেন মমতা ,পঞ্চায়েত ভোটের কৌশল ঠিক করতে কালীঘাটে বৈঠকে বসেছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাতেই অভিষেককে রাজ্য সভাপতি করার প্রস্তাব দিলেন সুব্রত বক্সী। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সুব্রত। অভিষেক সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মসূচি দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন বলে মনে করেন সুব্রত বক্সী। সে জন্যই তাঁকে এই ‘গুরুদায়িত্ব’ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব রেখেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতার সামনে। যদিও এই প্রস্তাব নিয়ে শনিবার কোনও আলোচনা হয়নি ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে। দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী সুব্রত বক্সীর মুখে এই কথা শুনে তাঁকে থামিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্সীও বিষয়টি নিয়ে আর কোনও কথা বলেননি।
প্রসঙ্গত তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে মমতার বিশ্বস্ত সঙ্গী সুব্রত বক্সী। এমনকি তৃণমূলের জন্মের আগেও মমতা আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ১৯৮৪ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জিতে মমতা যখন প্রথম বার সাংসদ হয়েছিলেন তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সুব্রতর। মমতার কথাতেই ২০০১ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চাকরি ছাড়েন সুব্রত। সে বছর প্রথম বার ভোটেও লড়ে জয়ীও হয়েছিলেন। এর পর ২০০৬ সালে চৌরঙ্গী বিধানসভা থেকে জিতেছিলে। ২০১১ সালে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন তিনি। জেতার কয়েক মাস পরে মমতার জন্যই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। সেই উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে জেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন তিনি। মুকুলের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়তেই বক্সীকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে বসান মমতা। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে না দাঁড়ালও ২০২০ সালে মমতার নির্দেশ মেনে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। সেই সুব্রতই এ বার রাজ্য সভাপতির দায়িত্বভার অভিষেকের কাঁধে তুলে দেওয়ার কথা জানালেন।
আরও পড়ুন – ‘BJP-কে পছন্দ করি TMC-কে কেন ভোট দেব?’ পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির ভিডিয়ো ফাঁস…
শনিবারে কালীঘাটের বৈঠকে অভিষেককে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি করার প্রস্তাব দেন সুব্রত বক্সী। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে রাজ্য সভাপতির পদে থাকা সুব্রত বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “অভিষেক নবজোয়ার কর্মসূচি খুব সুন্দর করেছে। মুকুল চলে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন আমি দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ্য সভাপতি দুই দায়িত্বই সামলেছি। অভিষেককেও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি দলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দিন। আমি রাজ্য সংগঠনের চেয়ারম্যান থাকব। আপনি যেমন চেয়ারপার্সন।” সুব্রত বক্সীর এই কথা শুনে মমতা বলেন, “আপনি পুরনো লোক। এসব এই বৈঠকে আলোচনার বিষয় না।” এই কথা বলে ‘পুরনো লোক’ বক্সীকে এ প্রসঙ্গে আর কথা বাড়াতে দেননি দলনেত্রী।