রাম নবমী হিংসা মামলায় শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য, তদন্ত চালিয়ে যাবে NIA , রাম নবমী হিংসা মামলায় শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। আপাতত এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এনআইএ তদন্তের রায়ই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি মনোজ মিশ্র, বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালার বেঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাম নবমী হিংসা মামলা রাজ্য পুলিশের হাতেই রাখতে চেয়েছিল। রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার যে বিজ্ঞপ্তি, তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
গত সোমবার শীর্ষ আদালতের শুনানিতে রাজ্যের তরফে প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বিজেপি নেতাদের তরফ থেকে দায়ের করা একাধিক জনস্বার্থ মামলা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সিঙ্ঘভি সওয়াল করেছিলেন, “৩০ মার্চ ঘটনা ঘটে। একই দিনেই তিনটি এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। পরের দিন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তারপর পরপর তিন দিন তিনটে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়।” ৫ এপ্রিল আদালতে পুলিশের তরফে অ্যাকশন রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। ৩৯ জনকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাও উল্লেখ থাকে হাইকোর্টে রাজ্য পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে হস্তান্তর করা অনুচিত বলে সওয়াল করে মনু সিঙ্ঘভি।
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী পি এস পাটোয়ালিয়ার সওয়াল করেন, “গ্রেফতার করা হলেও ধৃতদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে এফআইআর দায়ের করেনি পুলিশ।” দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, এফআইআর-গুলির প্রতিটিতে উল্লিখিত অভিযোগ একই রকমের কি না।
রাজ্য পুলিশের তরফে আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ সওয়াল করেন, “ছ’টি ভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ৬টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন দিনে ঘটনাগুলি ঘটেছিল। সেখানে বিস্ফোরক কিংবা বোমা ব্যবহারের কোনও প্রমাণ মেলেনি। এমনকি যাঁরা আহত হয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষতও প্রমাণ করে না, বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। আমরা বিস্ফোরক ধারা রুজু করতে পারব না।” এনআইএ আদালতে রিপোর্ট জমা দেয়। তার ভিত্তিতে এনআইএ-এর হাতেই এই মামলার তদন্তভার থাকল।
আরও পড়ুন – ‘সত্যিটা দেশবাসীর জানা প্রয়োজন’, মণিপুর ইস্যুতে বড় ঘেষণা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের
রাম নবমীর দিন রাজ্যের শিবপুর, হাওড়া, ডালখোলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিংসার অভিযোগ ওঠে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তরফে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। রাম নবমীতে হিংসার ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানান তিনি। কলকাতা হাইকোর্টে দীর্ঘ শুনানির পর এনআইএ-র হাতে তদন্তভার দেওয়া হয়। রাজ্য পুলিশের হাত থেকে এই মামলার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।