গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগে জালিয়াতি, শিক্ষক নিয়োগেও বিস্ফোরক তথ্য সিবিআই-র, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এখনও উত্তাল বঙ্গরাজনীতি। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইতিমধ্যেই অনেক প্রভাবশালী গ্রেফতার হয়েছেন। দুর্নীতি সংক্রান্ত অনেক তথ্যও সামনে এসেছে। অযোগ্যদের চাকরি দিতে বিভিন্ন ভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে সিবিআই সূত্রে। ওএমআর জালিয়াতি করে যেমন নিয়োগ করা হয়েছে, তেমনই তালিকায় না থেকেও চাকরি পেয়েছেন অনেকে। আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্যানেল থেকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আগের ব়্যাঙ্কের প্রার্থীকে চাকরি না দিয়ে ব়্যাঙ্কের পিছনে থাকা প্রার্থী পেয়েছেন। এই অভিযোগ উঠেছে। সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য হাতে এসেছে টিভি৯ বাংলার। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কিছু বিভাগে মোট নিয়োগের একাংশতে জালিয়াতি হয়েছে। আবার কোনও কোনও নিয়োগ সম্পূর্ণ জালিয়াতি করে করা হয়েছে।
শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে জালিয়াতির অঙ্কটা আরও বৃহৎ। গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মী নিয়োগে কোনও ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ, কোনও ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ জালিয়াতি হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মী পদে মোট ৪ হাজার ৪৮৭ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওএমআর-এ গন্ডগোল ছিল ২ হাজার ৮২৩ জনের। তালিকায় না থেকেও নিয়োগ হয়েছিল ১৪১ জনের। বাতিল হওয়া প্যানেল থেকে ৬০৭ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। এই ৬০৭ জনের মধ্যে ১০ জন আবার পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। তা সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছিলেন।
একই ছবি গ্রুপ সি শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও। এখানে মোট নিয়োগের সবটাই জালিয়াতি করে হয়েছিল। ওই পদে মোট ২ হাজার ৩৭ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিবিআই-এর তথ্য বলছে, গ্রুপ সি-তে ওএমআর-এ গন্ডগোল ছিল ৩ হাজার ৪৮১ জনের। কোনও তালিকায় না থাকলেও নিয়োগপত্র পান ১ হাজার ৭১৫ জন। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া তালিকা থেকে ৩৮১ জন নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন। এই তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ওএমআর-এ জালিয়াতি করেও অনেকে চাকরি পাননি। কিন্তু গ্রুপ-সি এর সমস্ত নিয়োগই হয়েছে অবৈধ ভাবে। অন্তত সিবিআই-এর দেওয়া তথ্যে তেমনটাই উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন – দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় মদের দোকানে ঝামেলা,পিটিয়ে ‘খুন’ যুবককে
সিবিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, নবম দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে মোট নিয়োগ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৪২৫ জনকে। এর মধ্যে ৯৫২ জন ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন। তালিকায় না থাকলেও ৫২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া প্যানেল থেকে ১৮৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগেও একই ছবি ধরা পড়েছে। একাদশ ও দ্বাদশে মোট ৫ হাজার ৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৯০৭ জনের ওএমআর-এ গন্ডগোল সামনে এসেছে। তালিকায় না থেকেও নিয়োগ পেয়েছেন ৭৮ জন এবং মেয়াদ শেষ হওয়া প্যানেল থেকে ৩৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এই দুই ক্ষেত্রে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকের ১৮ শতাংশই জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন। অর্থাৎ যোগ্যতার ভিত্তিতেও অনেকে চাকরি পেয়েছেন।