ইন্ডিয়া জোটকে বোকা বানাচ্ছেন কেজরী? বিস্ফোরক কংগ্রেস নেতা, সন্দীপ দীক্ষিত, কি দাবি করেছেন তিনি, সোমবার (৭ অগস্ট), ৪ মাস বাদে লোকসভায় পা রাখলেন রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধীর সংসদে প্রত্যাবর্তনকে তাঁদের জয় হিসেবে মনে করছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা। একই দিনে রাজ্যসভায় দিল্লি রাজধানী এলাকা সরকার (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ পেশ করতে চলেছে কেন্দ্র। এই বিলকে কেন্দ্র করে, ফের জোটের মধ্যে ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠল। দল হিসেবে কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিলেও, অনেক কংগ্রেস নেতাই, বিশেষ করে দিল্লির নেতারা দলের এই অবস্থানে সন্তুষ্ট নন। ফের একবার দলের অবস্থানের বিরোধিতা করলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ দীক্ষিত। তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই অধ্যাদেশ বিলের বিরোধিতা করা ভুল।
সন্দীপ দীক্ষিত আরও দাবি করেছেন, অরবিন্দ কেজরীবাল দিল্লির জনগণকে ‘বোকা’ বানিয়েছেন। ইন্ডিয়া জোটকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “অরবিন্দ কেজরীবাল যেভাবে এর আগে দিল্লির মানুষকে বোকা বানিয়েছেন, এখন তিনি একইভাবে জোটের সদস্যদের এবং গোটা দেশকে বোকা বানাচ্ছেন।” এর আগেও ইন্ডিয়া জোটে আপের থাকা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, কোনও জঙ্গলে সিংহ, হাতির সঙ্গে খ্যাকশিয়ালও থাকে। জোটের অন্দরে যে সবকিছু ঠিক নেই, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত দলের অনেক নেতাই মেনে নিতে পারছেন না, সন্দীপ দীক্ষিতের মন্তব্য থেকে তা স্পষ্ট। বিহার ও বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং জোটের নাম ঠিক করেছে। তবে, বাকি রয়েছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় – আসন ভাগাভাগি। দিল্লি-সহ একাধিক রাজ্যে অন্যান্য দলগুলিকে আসন ছাড়ার ক্ষেত্রে নীচু তলায় নেতাদের কাছ থেকে বাধার মুখে পড়তে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে এই অধ্যাদেশ জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। অধ্যাদেশ অনুসারে, দিল্লির আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ক্ষমতা দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে চলে যাবে কেন্দ্রের হাতে। প্রথম থেকেই এই বিলের বিরোধিতা করে, বিলটিকে রাজ্যসভায় পাস হওয়া থেকে আটকাতে বিরোধীদের সহায়তা চেয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। এমনকী পটনা এবং বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের আগে কেজরীবাল সাফ জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস যদি এই বিলের বিরোধিতা না করে, আপ এই জোটে যোগ দেবে না। বেঙ্গালুরু বৈঠকের ঠিক আগের দিন এই বিলের বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছিল কংগ্রেস। রাজ্যসভায় এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য হুইপও জারি করেছে শতাব্দী প্রাচীন দল।
আরও পড়ুন – রেলস্টেশনের উন্নয়ন হলে কি ট্রেন ভাড়া বাড়বে? ট্রেন ভাড়া সম্পর্কে জবাব দিলেন…
কংগ্রেস নেতা বলেছেন,“লোকসভায় বিলটি পাস হওয়া নিশ্চিত ছিল।এখানে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।বিলটি যখন রাজ্যসভায় পেশ করা হবে,তখন সেখানে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও,লোকসভার মতোই অন্য কিছু দল বিলটিকে সমর্থন করবে। তাই এটি পাস হবেই।আমার মতে,এই বিলের বিরোধিতা করা ভুল।”কেন তিনি মনে করছেন,এই বিলের বিরোধিতা করে তাঁর দল ভুল করছে?এই বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও,অরবিন্দ কেজরীবালের দলের প্রতি তাঁর অনাস্থা তিনি গোপন করেননি। তাঁর মতে,ইন্ডিয়া জোটে না থাকার হুমকি দিয়ে কংগ্রেস দলকে একপ্রকার এই বিলের বিরোধিতা করতে বাধ্য করেছে আম আদমি পার্টি। তিনি বলেছেন,“আম আদমি পার্টি কে,যে তারা অন্য রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করছে?ওরা নিজেরাই ফাঁদে পড়েছে। দলের তাবড় নেতারা কারাগারের বাইরে থাকবেন না ভিতরে থাকবেন,ওরা সেটাই জানে না। ওদের উচিত নিজেদের নিয়ে চিন্তা করা।কংগ্রেস পার্টি শুধু এই বিলের ক্ষেত্রেই তাদের সমর্থন করবে।”