‘ভারতে জনসংখ্যা এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে…’, কলকাতার এক অনুষ্ঠানে এসে প্রকাশ ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির, ‘বহুত্ববাদের আবহে বহুত্ববাদকে বজায় রেখেই গণতন্ত্রের সেরা রূপ দেখতে পাওয়া যায়।’ গণতন্ত্র নিয়ে এমনই ভাবনা শোনা গেল ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির গলায়। একইসঙ্গে ভারতের বেলাগাম জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তিনি। সম্প্রতি এক শহরের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে এসে ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান নারায়ণ মূর্তি গণতন্ত্র থেকে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি সহ একাধিক বিষয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন।
নারায়ণ মূর্তি মনে করেন,’ভারতে গণতন্ত্রের সেরা রূপ তখনই দেখা যাবে, যখন বিভিন্নতাগুলির মধ্য থেকে একতার বিষয়টি খুঁজে নিয়ে বিভিন্নতাকেও আমরা সম্মান করব। জগৎসভায় সেরার আসন নিতে হলে সেরা দেশের প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্ব নিতে হবে। নিজের সেরাটা দিতে হবে।’ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজবেল্ট একবার বুঝিয়েছিলেন। সত্যিকারের গণতন্ত্রের চারধরনের স্বাধীনতা রয়েছে। ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা, বিশ্বাসের স্বাধীনতা, ভয়ের থেকে স্বাধীনতা এবং আমি কী চাই সেই ইচ্ছে বজায় রাখার স্বাধীনত।।
ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতার মতে, ‘গণতন্ত্রে বসবাসরকারীদের এটা মনে রাখা দরকার, তাদের বাক স্বাধীনতা রয়েছে বলেই অন্যদের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করার প্রয়োজন নেই। বরং আরও উন্নতির জন্য ভয় না পেয়ে অন্য কেউ মতপ্রকাশ করতে দেওয়া উচিত। প্রত্যকে মত প্রকাশের সুযোগ পেলে তবেই তো গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হবে।’
এদিন নারায়ণ মূর্তি ব্যাখায় বলেন,’গণতন্ত্রে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়। প্রত্যেককে স্বাধীনতা উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে অন্যের অধিকার বজায় রাখতেও শেখায়।’ শুধু গণতন্ত্রের পাঠই নন, ইনফোসিস কর্তা দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন দেশের এমন কিছু সমস্যার যার কারণে শ্লথ গতি অর্থনীতি। এছাড়া শীঘ্রই জনবিস্ফোরণ, দারিদ্র্য, দূষণমুক্ত বাতাস ও পরিষ্কার পানীয় জলের ঘাটতি, এই সমস্যাগুলির সমাধান করতে হবে। তাঁর মতে, ভারতে বর্তমানে যে হারে জনসংখ্যা বেড়ে চলেঠে, তাতে আগামী দিনে জনবিস্ফোরণ ঘটবে। সেই কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা এইমুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নইলে আগামীদিনে পর্যাপ্ত পরিমানে খাদ্য ও পানীয় জল পাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন – আচমকাই তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ, ক্লাসে বসে অসুস্থ হয়ে পড়ে অন্তত ২৪ জন…
শহরের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইনফোসিস কর্তা বলেন, ‘বহুত্ববাদের পরিবেশেই সবথেকে বেশি বিকশিত হয় গণতন্ত্র। আসলে এমন পরিবেশে প্রত্যেক নাগরিক নিজের ধর্ম, নিজের বিশ্বাস- ধ্যানধারণা অন্যের উপর চাপিয়ে না দিয়ে নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় বজায় রাখতে পারে।’ তাঁর মতে, ‘ভারতে গণতন্ত্র তখনই বিকশিত ও সমৃদ্ধ হবে, যখন এরকম দেশবাসী মতভেদ ও মতপার্থক্যের বদলে বিভিন্নতাকেই মান্যকা দেবে। বৈরিতা ভুলে সাম্যকে অগ্রাধিকার দেবে।’