কখন-কোথায়-কবে চাঁদে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩? জেনে নিন এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি। ‘ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’। শ্রেষ্ঠ হওয়ার পথ আর বেশি দূরে নেই। ইতিহাস তৈরি করতে প্রস্তুত ভারত।চাঁদের স্পৃষ্ট স্পর্শ করা এবং সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে চন্দ্রযান-৩-কে। পরিকল্পনা মতোই পৃথিবী পৃষ্ঠের মায়া কাটিয়ে চন্দ্রবৃত্তে ঢুকে পড়েছে সে। এরপর গতি ও কক্ষপথ কমিয়ে ধীরে ধীরে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার কথা রয়েছে তার। সংক্ষেপে জেনে নেব কবে, কোথায় অবতরণ করবে চন্দ্রযান-৩। নজর রাখব ইতিবৃত্তে। উৎক্ষেপণ উৎক্ষেপণ যান চাঁদের মায়াবৃত্তে প্রবেশ সফট ল্যান্ডিং তারিখ ১৪ অগাস্ট ২০২৩ জিএসএলভি মার্ক-৩ ৩ অগাস্ট ২০২৩ ২৩ অগাস্ট
চাঁদের সফট ল্যান্ডিং
সফট ল্যান্ডিং বলতে বোঝানো হয়েছে ল্যান্ডারের সফল অবতরণকে। এই ক্ষেত্রে ল্যান্ডার এবং রোভার কারও নূন্যতম ক্ষতি হওয়াও চলবে না। তাহলেই তাকে সফল সফট ল্যান্ডিং বলা হবে। অন্যথায় যদি ল্যান্ডার বা রোভারে সামান্য ক্ষতিও লক্ষ্য করা যায় কিংবা অবতরণে কোনও ত্রুটি দেখা যায় (প্রযুক্তি গত সমস্যা, সংঘর্ষ ইত্যাদি) তাকে হার্ড ল্যান্ডিং বলা হবে। ল্যান্ডারটির মধ্যে থাকা ছয় চাকার রোভার ‘প্রজ্ঞান’ চন্দ্রপৃষ্ঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। তবে চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকাশযান অবতরণ করানোর বিষয়টি খুব যে সহজ তা নয়। একাধিক বাধা বিপত্তি রয়েছে সেখানে। সেই বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নির্বিঘ্নে চন্দ্রযান-৩-কে অবতরণ করানোই মূল চ্যালেঞ্জ।
ঐতিহাসিক অর্জন: একটি অভিজাত ক্লাবে যোগদান
অভিযান যদি সফল হয়, তবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা পাবে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পরে চতুর্থ দেশ হিসাবে মহাকাশযান সফল ভাবে চাঁদে অবতরণ করানোর তালিকায় উঠে আসবে ভারত। ১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথমবার মানুষ পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চন্দ্রযান-৩ মিশনের সাফল্য শুধুমাত্র ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির জন্য একটি মাইলফলকই হবে না বরং বিশ্বব্যাপী মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দরজা খুলে দেবে।
চন্দ্রযান-৩ ট্র্যাকিং
চন্দ্রযান-৩-এর গতিবিধির দিকে সারাক্ষণ নজর রেখে চলেছে ইসরো। চন্দ্রযান-৩ সম্পর্কে সব আপডেট জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইসরোর ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া অ্য়াকাউন্টে। রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং মহাকাশ মিশনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই প্রক্রিয়াটি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের মিশনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করতে সহায়তা প্রদান করছে।
সাফল্যের একবারের শেষ ধাপে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। গোটা বিশ্বও এই মিশন নিয়ে যথেষ্ট উন্মুখ। চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণের আশায় প্রহর গুনছে গোটা বিশ্ব। এই মিশন সফল হলে মহাকাশ গবেষণার সিঁড়িতে ‘হাইজাম্প’ দেবে ইসরো। সঙ্গে ভবিষ্যতে গবেষণার পরিধি আরও বৃহত্তর হবে। পৃথিবীর কোনও দেশ এখনও পর্যন্ত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পারেনি। সেই ক্ষেত্রে এক বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হতে চলেছে ভারত। চাঁদে মহাকাশযানের সফল অবতরণে কৃত্বিতের তকমা পাওয়া আর কিছু সময়ের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন – কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেবেন বাংলার ৮ পুলিশ আধিকারিক, রয়েছেন এক…
চন্দ্রযান-৩ মিশন টাইমলাইন
১৪ জুলাই ২০২৩ উৎক্ষেপণের দিন থেকেই থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। কবে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামবে চন্দ্রযান-৩ সেই অপেক্ষায় দিন গোনা শুরু হয়ে গিয়েছে উৎক্ষেপণের দিন থেকেই। জিএসএলভি মার্ক-৩ রকেটে উৎক্ষেপণ করা হয় ইসরোর এই মহাকাশযানকে। ৩ অগাস্ট চাঁদের কক্ষপথের রাস্তা ধরে নেয়। আশা করা হচ্ছে ২৩ অগাস্ট চন্দ্রপৃষ্ঠে সফল ল্যান্ড করবে এই মহাকাশযান।
চাঁদকে প্রদক্ষিণ করতে করতে আর কয়েক দিনেই চাঁদের পৃষ্ঠে পা রাখবে ইসরোর এই মহাকাশযান। চাঁদে অবতরণের আগে বেশ কয়েকবার পাক খাবে। ধীরে ধীরে এক ধাপ করে চাঁদের আরও কাছে আসবে। যেমন ভাবে পৃথিবীকে চক্কর কাটার সময় এক ধাপ করে পৃথিবী থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছিল চন্দ্রযান-৩, ঠিক একই ভাবে চাঁদের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাবে এই মহাকাশযান।