দিল্লী – বিজ্ঞানচর্চা নিয়ে কি আগ্রহ হারাচ্ছে মোদি সরকার? পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার মতো একাধিক বিষয়ের ল্যাব তৈরিতে সমগ্র শিক্ষা অভিযান কর্মসূচির আওতায় বহু রাজ্যেরই মেলেনি এক টাকাও। কম্পিউটার রুমের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি কমবেশি প্রায় একই। সম্প্রতি এমনই এক কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।আর তাতেই চোখ রীতিমতো কপালে উঠে গিয়েছে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মহলের। বিদ্যালয়গুলিতে যদি পরীক্ষাগারই ঠিকমতো তৈরি না হয়, তাহলে বিজ্ঞান চর্চা কীভাবে হবে?
কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যানে সমগ্র শিক্ষা অভিযান কর্মসূচির ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানত সরকারি স্কুলগুলির ন্যূনতম পরিকাঠামো খাতে কত বাজেট বরাদ্দ হয়েছে, তারই খতিয়ান প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি স্কুলে ফিজিক্স ল্যাব সংক্রান্ত খাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ৩২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। বায়োলজি ল্যাবের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ মাত্র ৩৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। কেমিস্ট্রি ল্যাবের জন্য সারা দেশে এক বছরের জন্য মাত্র ৩৬ কোটি ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে মোদি সরকার। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে উল্লিখিত খাতে দেশের বহু রাজ্যেরই কোনও টাকা মেলেনি। বঞ্চিত এই রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ।
পরিসংখ্যানে দেশের মোট ২৬টি রাজ্যের খতিয়ান দিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে ১৫টি রাজ্যেই সরকারি স্কুলে ফিজিক্স ল্যাব সংক্রান্ত পরিকাঠামো খাতে সমগ্র শিক্ষা অভিযান কর্মসূচিতে কোনও টাকা মেলেনি। অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরলের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাতেও এই খাতে কোনও টাকা বরাদ্দ করা হয়নি। কেমিস্ট্রি ল্যাব সংক্রান্ত পরিকাঠামোগত মানোন্নয়ন খাতেও দেখা যাচ্ছে, দেশের ১৫টি রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্কুল টাকা পায়নি। পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো বহু রাজ্যের নাম এখানেও বাদ পড়েছে। দেশের ১৬টি রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্কুল আবার জীববিদ্যার পরীক্ষাগার সংক্রান্ত পরিকাঠামোগত মানোন্নয়নের টাকা পায়নি। কম্পিউটার রুমের ক্ষেত্রে দেশের ১২টি রাজ্যের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। এই ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রক সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে মন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রত্যেক আর্থিক বছরে সব সরকারি স্কুলেই ল্যাবের পরিকাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজন হবে, এমনটা নয়। হয়তো দু’বছর কোনও স্কুল পেল না।
