কোচবিহার- চার বছর পর আবারও উত্তরের জনপদে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অ্যানথ্রাক্স। কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার এক প্রত্যন্ত গ্রামে সংক্রমিত ছাগলের মাংস খেয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরেই এলাকায় চরম উদ্বেগ, সঙ্গে জারি হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
অ্যানথ্রাক্স, যা ‘ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস’ নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়, মূলত তৃণভোজী গৃহপালিত ও বন্য প্রাণীদের আক্রান্ত করে। সংক্রামিত পশুর মাংস, চামড়া বা পশমের মাধ্যমে এই রোগ মানুষের শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ১৯৯৩ ও ২০২০ সালেও জলদাপাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে প্রাণ হারিয়েছিল পাঁচটি একশৃঙ্গ গন্ডার। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা বন দপ্তরের কাছে।
জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গরুমারা ও চাপরামারী জাতীয় উদ্যানের তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের উপরে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। গরুমারার ৫৫টি একশৃঙ্গ গন্ডার এখন কঠোর পর্যবেক্ষণে। বন দপ্তরের এডিশনাল ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার রাজীব দে জানিয়েছেন, “গৃহপালিত পশুদের সংক্রমণ থেকে বন্যপ্রাণীর মধ্যে রোগ ছড়াতে পারে, আবার উল্টোটাও সম্ভব। তাই দুই দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।”
বন্যপ্রাণ বিভাগ পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে। বন দপ্তরের নিজস্ব কুনকি হাতিদের দেওয়া হচ্ছে প্রতিরোধমূলক ভ্যাকসিন। আপাতত সব হাতি সুরক্ষিত থাকলেও মানুষের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ।
স্বাস্থ্য এবং বন দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে উত্তরবঙ্গের সংবেদনশীল বনাঞ্চল এক নতুন বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
