স্বাস্থ্য – আজকের ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই মোবাইল যদি দিনভর হাতছাড়া না হয়, তাহলে তা শরীর ও মনের উপর ফেলতে পারে মারাত্মক প্রভাব। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক—তিন দিকেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
চোখের উপর প্রভাব সবচেয়ে আগে পড়ে। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেইন’, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, ঝাপসা দেখা বা মাথাব্যথা দেখা দিতে পারে। মোবাইলের নীল আলো (blue light) ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন ক্ষরণে বাধা দেয়, ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এতে অনিদ্রা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া এবং কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
শুধু চোখই নয়, কাঁধ, ঘাড় ও হাতেও টান পড়ে। ‘টেক্সট নেক’ বা ‘স্মার্টফোন স্লাউচ’ নামক এক ধরনের ভঙ্গিমা-সম্পর্কিত ব্যাধি এখন অনেক তরুণ-তরুণীর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সারাক্ষণ নিচু হয়ে মোবাইলে তাকিয়ে থাকার কারণে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক গঠনেও পরিবর্তন আসে।
মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও সমস্যা কম নয়। গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে মানুষের মধ্যে নিজের জীবনের প্রতি অসন্তোষ, অবসাদ এবং একাকীত্ব বেড়ে যায়। বাড়তে পারে উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং এমনকি ডিপ্রেশনও।
সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও মোবাইল আসক্তি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, সামনাসামনি কথোপকথন—সব কিছুই পিছিয়ে যাচ্ছে মোবাইলের দখলে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় স্ক্রিন থেকে বিরতি নেওয়া, খাবার সময় মোবাইল থেকে দূরে থাকা, ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করা এবং ‘ডিজিটাল ডিটক্স’-এর অভ্যাস গড়ে তোলা।
অন্যথায় এই ছোট্ট যন্ত্রটাই হয়ে উঠতে পারে বড় বিপদের কারণ।
