সম্পত্তি না লিখে দেওয়ায় পাঁশকুড়ায় পরিবারকে একঘরে, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি, তৃণমূল নেতার নাম এফআইআরে

সম্পত্তি না লিখে দেওয়ায় পাঁশকুড়ায় পরিবারকে একঘরে, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি, তৃণমূল নেতার নাম এফআইআরে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



পূর্ব মেদিনীপুর – মধ্যযুগীয় বর্বরতা যেন ফিরে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। সম্পত্তি গ্রামবাসীদের নামে লিখে না দেওয়ায় এক পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, পরিবারের সদস্যদের ওপর নেমে এসেছে মারধর, প্রাণনাশের হুমকি এবং সামাজিক বয়কটের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি। এ ঘটনায় তৃণমূলের নবনিযুক্ত জেলা সভাপতি সুজিত রায়-সহ একাধিক নেতার নাম জড়িয়েছে এফআইআরে, যা ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে।

পাঁশকুড়ার রাধাবল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় কালসা জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামের কিছু বাসিন্দা তাদের পারিবারিক সম্পত্তির একটি অংশ দাবি করে। সেই দাবি মানা না হওয়ায় শুরু হয় অত্যাচার। সঞ্জয়ের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের একঘরে করে রাখা হয়। গ্রামের দোকান থেকে কেনাকাটা করতে দেওয়া হয় না, চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা দেওয়া হয়, এমনকি বাচ্চাদের স্কুলে যেতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। একপ্রকার সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় তাঁদের।

ঘটনার তীব্রতা আরও বেড়ে যায় গত ২৬ মে, যখন তাঁরা বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, তখন ফের চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় সঞ্জয়ের বাবার মাথায়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পরিবারের দাবি, তাঁরা যেন নিরাপদে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেন, সেই ব্যবস্থাই এখন তাঁদের একমাত্র চাওয়া। অন্যদিকে, অভিযুক্ত গ্রামবাসীদের তরফে এক গ্রাম কমিটির সদস্য জানান, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরং সঞ্জয়দের পারিবারিক সমস্যার দায় গ্রামবাসীদের ওপর চাপানো হচ্ছে। যদিও তিনি স্বীকার করেন, সঞ্জয় যেসব বাসিন্দার নামে মামলা করেছিলেন, তাদের মামলা লড়াইয়ের খরচ বহনের বিষয়ে গ্রাম কমিটি একপ্রকার ‘ফরমান’ জারি করেছিল।

সবচেয়ে বিস্ফোরক তথ্য, সঞ্জয় কালসা যাঁদের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের নবনিযুক্ত জেলা সভাপতি সুজিত রায় এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা কৃষ্ণপদ খাঁ। তৃণমূলের দাবি, এই পুরো ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি কর্মী সঞ্জয় ইচ্ছাকৃতভাবে তৃণমূল নেতাদের কালিমালিপ্ত করতে এই মামলা করেছেন।

তবে পাল্টা বিজেপির দাবি, ঘটনাটি সম্পূর্ণ গ্রামকেন্দ্রিক এবং তৃণমূল এখন ওই এলাকায় জনভিত্তি হারিয়েছে বলেই বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।

ঘটনার তদন্তে নেমেছে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেদিকেই নজর সবার।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top