নদিয়া – নদিয়ার শিল্পজগতে এক উজ্জ্বল নাম সঞ্জু কুন্ডু। রানাঘাট পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মাহুতপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জু ছোটবেলা থেকেই আঁকার প্রতি দুর্বল। মায়ের কাছেই তাঁর আঁকার প্রথম পাঠ। সেই ছোট্ট ভালোবাসা আজ তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে।
২০১৯ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রকলায় স্নাতকোত্তর পাশ করে পেয়েছেন স্বর্ণপদক। রাজ্যের নানা প্রান্ত, এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর চিত্রকর্ম সমাদৃত হয়েছে। পুজো মণ্ডপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুল-কলেজ—সবখানেই তাঁর আঁকার ছাপ স্পষ্ট। এবার দ্বিতীয়বারের জন্য তাঁর আঁকা যাচ্ছে বিদেশে, গন্তব্য নেদারল্যান্ডস।
এক মাস ধরে সঞ্জু তৈরি করছেন একটি বিশেষ চিত্রকর্ম, যা আঁকা হয়েছে কাঠের বারকোষের (wooden panel) ওপর। এই ধরনের মাধ্যমে আঁকা খুবই কষ্টসাধ্য, জানালেন শিল্পী নিজেই। ছবিটির দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ কেমিক্যাল। শিল্পীর কথায়, “চেষ্টা করেছি এমন কিছু তৈরি করতে, যা সারা জীবন থেকে যাবে। ভবিষ্যতেও ভালো কাজ করার চেষ্টা করব।”
শুধু আঁকার দক্ষতাই নয়, শিল্পী সঞ্জু কুন্ডু বিশ্বাস করেন অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “নিরলস পরিশ্রম, নিজের ভুল থেকে শিক্ষা, আর নিজেকে বড় না ভেবে নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা—এই তিনটি জিনিস থাকলে সাফল্য আসবেই।”
চলচ্চিত্র বা পোর্ট্রেট আঁকার ক্ষেত্রে যে ধৈর্য ও নিখুঁত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন, তা সঞ্জু উপলব্ধি করেছেন কাজ করতে করতেই। তাঁর মতে, “নিজেকে জানতে হবে, ভুল-ত্রুটি স্বীকার করে শুধরে নিতে হবে—তবেই সামনে এগোনো সম্ভব।”
সঞ্জুর এই আন্তর্জাতিক কৃতিত্বে যেমন খুশি তাঁর পরিবার, তেমনি গর্বিত তাঁর মা জয়ন্তী কুন্ডু। ছেলে যখন নিজের যোগ্যতায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে পৌঁছয়, তখন এক মায়ের মুখে ফুটে ওঠে সন্তুষ্টির হাসি।
