ভাইরাল – মাত্র একটি আঁকশি আর একটি বস্তা— সম্বল বলতে এটাই। সেই সামান্য উপকরণ নিয়েই প্রায় মৃত্যুদূতের মতো ভয়ঙ্কর এক শঙ্খচূড় সাপকে কব্জা করলেন কেরলের তরুণী বন আধিকারিক জিএস রোশনি। ১৮ ফুট লম্বা বিষধর সাপটিকে খালি হাতে বাগে আনতে গিয়ে একটুও ভয় না পেয়ে চমকে দিলেন গোটা দেশকে। তাঁর এই সাহসিক অভিযান এখন ভাইরাল সমাজমাধ্যমে।
কেরলের তিরুঅনন্তপুরম জেলার পেপ্পারা অঞ্চলের আঞ্চুমারুথুমূট এলাকায় এক জলস্রোতে স্নান করতে গিয়ে স্থানীয় মানুষ প্রথম দেখতে পান বিশাল আকৃতির সাপটিকে। খবর যায় বন দফতরে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন পারুথিপল্লি রেঞ্জের ফরেস্ট বিট অফিসার জিএস রোশনি। সঙ্গে ছিল শুধু একটি লাঠি আর একটি কালো কাপড়ের থলি। তবুও ভয়ডরহীন রোশনি শুরু করেন সাপটিকে ধরার অভিযান।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যায়, খাকি উর্দি পরে জলধারার ধার ঘেঁষে রোশনি চেষ্টা করছেন সাপটিকে বাগে আনতে। আক্রমণাত্মক সাপটি একাধিকবার তাঁকে লক্ষ্য করে ছুটে আসে। কিন্তু রোশনি হার মানেননি। ধৈর্য ও ঠান্ডা মাথায় বিশালাকৃতির সাপটির লেজ ধরে তাকে টেনে আনেন। ধীরে ধীরে সাপটির মুখের কাছে কালো থলিটি ধরেন, এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে সেটিকে পুরোপুরি বস্তাবন্দি করতে সক্ষম হন তিনি। সফল হওয়ার পর তাঁর মুখে ফুটে ওঠে একটি শান্তির হাসি।
এই অভাবনীয় ঘটনার ভিডিয়ো এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করেন ‘রঞ্জন মাধেকার’ নামে এক ব্যক্তি। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিয়ো। নেটিজেনরা রোশনির সাহস ও পেশাদারিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। কেউ লেখেন, “ম্যাডাম আপনাকে কুর্নিশ জানাই,” কেউ বা বলেন, “এমন মেয়ে দেশের গর্ব।”
রোশনি জানান, আট বছরের কর্মজীবনে ইতিমধ্যেই তিনি ৮০০-র বেশি সাপ ধরেছেন। কিন্তু এমন বিরল, বিশাল এবং বিপজ্জনক শঙ্খচূড় কেরলের দক্ষিণাঞ্চলে সচরাচর দেখা যায় না। তাঁর এই সাহসিকতা এবং পেশাগত নিষ্ঠা এখন হয়ে উঠেছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।
‘সাপ ধরা তাঁর বাঁ-হাতের খেলা’— এই উক্তিটি যে একেবারে মিথ্যে নয়, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন জিএস রোশনি, সাহসের আদর্শ হয়ে উঠেছেন গোটা দেশের কাছে।
