আসানসোল – ১১ বছর ধরে যে মেয়েটিকে নিজের কন্যাসম স্নেহ দিয়ে বড় করেছিলেন সঞ্জীব শর্মা ও তাঁর স্ত্রী নাগমনিদেবী, সেই পালিত কন্যাই একদিন তাঁদের জীবন থেকে সুখ-স্বস্তির ছাদ ভেঙে দিল। বিশ্বাসভঙ্গের করুণ কাহিনি ঘটেছে আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের আলাউদ্দিন খাঁ বিথি এলাকায়। যাঁকে পরিবারের একজন ভেবেই লালনপালন করা হয়েছিল, সেই দীপুই শেষমেশ চুরির ঘটনার কেন্দ্রে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, দীপু নামের মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই সঞ্জীব শর্মার বাড়িতে ছিল। তার পদবী পর্যন্ত দেওয়া হয় ‘শর্মা’, পরিবারের একজন বলেই গণ্য করা হতো তাকে। কিন্তু সম্প্রতি দীপুর এক ‘পরিচিতা’— দিল্লি নিবাসী দীপা যাদব ওই বাড়িতে আসে। বৃহস্পতিবার নাগমনিদেবী বাজারে যাওয়ার সুযোগে বাড়ির আলমারি থেকে ২৫ ভরি সোনা, ১ কেজি রুপো এবং নগদ ২.৫ লক্ষ টাকা চুরি হয়ে যায়।
নাগমনিদেবী বাড়ি ফিরে হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নামে আসানসোল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে দীপুর বয়ানে অসঙ্গতি ধরা পড়ে এবং মোবাইল ঘেঁটে পুলিশ বুঝতে পারে, সে চুরির পরিকল্পনায় যুক্ত। পরে দীপু জানায় দীপা সেদিনই দিল্লিগামী ট্রেনে চেপে পালাবে।
পুলিশ মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ধরে অনুসন্ধান করে জানতে পারে দীপা দুর্গাপুর স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে। সেখানে অভিযান চালিয়ে দীপাকে বামাল সহ গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার দু’জনকেই আদালতে তোলা হয়।
এ ঘটনা ফের একবার মনে করিয়ে দেয়— অন্ধ বিশ্বাস কতটা মারাত্মক হতে পারে। ভালোবাসা দিয়ে গড়া সম্পর্কও হয়ে উঠতে পারে চোরের হাতিয়ার, যদি সাবধানতা অবলম্বন না করা হয়।
