কলকাতা – সপ্তাহান্তে লোকাল ট্রেন বাতিল এখন রেলের কাছে যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রতি সপ্তাহেই শনিবার ও রবিবার কোনও না কোনও শাখায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল হচ্ছে। একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনও যাত্রাপথ পরিবর্তন করে চালানো হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। এবার শিয়ালদহ শাখায় বেশ কিছু লোকাল ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে পূর্ব রেল।
তালিকায় রয়েছে ডানকুনি লোকাল, দত্তপুকুর লোকাল, বনগাঁ লোকাল, বারাসত লোকালসহ একাধিক ট্রেন। যদিও সপ্তাহান্তে অফিসযাত্রীদের ভিড় কিছুটা কম থাকায় দুর্ভোগ কিছুটা হ্রাস পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে গত কয়েক মাসে হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে বারবার লোকাল ট্রেন বাতিল হওয়ায় যাত্রীদের ক্ষোভ তীব্র হয়েছে। যদিও রেলের দাবি, বর্তমানের এই অসুবিধা ভবিষ্যতের সুবিধার জন্যই।
শুধু লোকাল ট্রেন নয়, ২৬ ও ২৭ জুলাই অর্থাৎ শনিবার ও রবিবার বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেনকেও ঘুরপথে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ও দার্জিলিং মেল। পুরী-শিয়ালদহ দুরন্ত এক্সপ্রেসের সময়সূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, দমদম জংশন স্টেশনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে। এই কাজের জন্যই ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে এবং বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হবে। ২৬ জুলাই রাতে বাতিল থাকবে আপ 32249 শিয়ালদহ-ডানকুনি লোকাল এবং ডাউন 32252 ডানকুনি-শিয়ালদহ লোকাল। ২৭ জুলাই বাতিল থাকবে শিয়ালদহ-হাবড়া আপ 33653 ও ডাউন 33654, শিয়ালদহ-দত্তপুকুর ডাউন 33612, শিয়ালদহ-বনগাঁ আপ 33817 ও ডাউন 33824, শিয়ালদহ-বারাসত আপ 33431 ও ডাউন 33432। এছাড়া শিয়ালদহ-ডানকুনি শাখার একাধিক আপ ও ডাউন ট্রেনও বাতিলের তালিকায় রয়েছে। যাত্রীদের গন্তব্যে যাওয়ার আগে ট্রেনের সময়সূচি দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বেসরকারিকরণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কোন বেসরকারি সংস্থা পাবে, তার দরপত্র খোলা হবে বলে খবর। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কি পরিচালনার দায়িত্বও বেসরকারি হাতে চলে যাবে? যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকে সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সূত্রের খবর, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কম্প্রিহেনসিভ ম্যানুয়াল মেনটেন্যান্স কন্ট্রাক্টের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হবে। দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং তারাই অন্যতম সম্ভাব্য সংস্থা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বউবাজার অংশসহ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সম্পূর্ণ পথে কবে পরিষেবা শুরু হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। এই অবস্থায় মেট্রো পরিচালনার দায়িত্বও যদি বেসরকারি হাতে চলে যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়াবৃদ্ধির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
