দিল্লি – নিউদিল্লি রেল স্টেশনে ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু এবং বহু যাত্রী আহত হওয়ার পর দায় কার্যত যাত্রীদের উপরেই চাপিয়ে দিল রেলমন্ত্রক। শুক্রবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, “ভিড়ের কারণ ছিল এক যাত্রীর মাথা থেকে বড় বোঝা পড়ে যাওয়া, যার ফলে সিঁড়িতে হুড়োহুড়ি শুরু হয়।” রেলমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, রেলের পরিকাঠামো এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা কি একেবারেই দায়ী নয়?
রেলমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা ১৫ মিনিটের পর থেকেই নিউদিল্লি স্টেশনের ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন ফুট ওভার ব্রিজে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে চলছিল। রাত ৮টা ৪৮ মিনিটে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু এবং ১৫ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভুক্তভোগীদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার তদন্তে উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভিড়ের মধ্যে এক যাত্রীর মাথা থেকে ভারী মালপত্র পড়ে যাওয়া থেকেই বিপর্যয়ের সূচনা। রেলমন্ত্রক সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই দায় যাত্রীদের উপর চাপিয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে—কেন ৪৯ হাজারেরও বেশি জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল, যা নির্ধারিত সীমার অনেক বেশি? কেন সময়মতো ফুট ওভার ব্রিজে পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? রেল বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রথম সরকারিভাবে তদন্ত রিপোর্টের ফাইন্ডিংস প্রকাশ্যে আনা হলেও রেলের দায় এড়ানোর প্রবণতা স্পষ্ট।
অন্যদিকে, রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের প্রশ্নের উত্তরে রেলমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে বিভিন্ন রাজ্যে ট্রেন নাশকতার ৮২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এনআইএ তিনটি মামলা নিয়েছে।
ঘটনার পর রেল কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। স্টেশনগুলিতে ‘হোল্ডিং এরিয়া’ তৈরি, ৭৩টি স্টেশনে কনফার্ম টিকিট ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধকরণ, সিসিটিভি স্থাপন ও ‘ওয়ার রুম’ চালু করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
