বিদেশ – রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ঘোষিত এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এই পদক্ষেপকে ট্রাম্পের “বড় কৌশলগত ভুল” বলে অভিহিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কেবল ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেই প্রভাব ফেলবে না, বরং বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতেও নতুন উত্তেজনার জন্ম দেবে।
দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ট্রাম্পের দাবি, ভারত যে রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল কিনছে, তার আয়ের একটি অংশ ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন রুপি মূল্যের রুশ তেল আমদানি করেছে। ট্রাম্প এই কেনাকাটাকে ‘যুদ্ধযন্ত্রে জ্বালানি সরবরাহ’ হিসেবে অভিহিত করে ভারতকে শাস্তি দিতে এই শুল্ক আরোপ করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায় এবং অযৌক্তিক” বলে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ১৪০ কোটির বেশি মানুষের দেশের জন্য জ্বালানি সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং রাশিয়া থেকে সস্তা তেল কেনা বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেও সাহায্য করছে। ভারত আরও দাবি করেছে, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম, সার ও প্যালাডিয়াম আমদানি করে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত পাল্টা শুল্ক আরোপের পথে না গিয়ে আগামী ছয় মাস কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবে। যদিও এই শুল্কের কারণে ভারতের টেক্সটাইল, রত্ন ও গয়না শিল্প, এবং অটো যন্ত্রাংশ রপ্তানিতে ৪০-৫০ শতাংশ হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ভারতের অর্থনীতি যেমন চাপে পড়বে, তেমনি আমেরিকার বাজারেও ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর।
