বিনোদন – দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার (১২ অগস্ট) সকাল ১০টায় বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলা ধারাবাহিক ও টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ৮৮ বছর বয়সে তিনি ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত একাধিক জটিল রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি স্টার জলসির জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গীতা এলএলবি’-তে শেষবার অভিনয় করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ থাকায় কাজও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
শেষ জীবনে বাড়িতে একাই ছিলেন, সঙ্গে ছিলেন পরিচারিকা। ছেলে তার দিকে তেমন খেয়াল রাখতেন না, মেয়ে ও জামাই ছিলেন তাঁর যত্নশীল। চিকিৎসার জন্য অর্থের অভাব ছিল এবং তাতে নিয়মিত চিকিৎসাও করানো সম্ভব হয়নি। বহুদিন ধরেই কিডনি, হার্ট, কোলেস্টেরলসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন বাসন্তী দেবী। এছাড়া বার্ধক্যজনিত সমস্যাও ছিল। অনেক সহকর্মী ও শিল্পী তাঁর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, তবু শেষরক্ষা হল না।
টলিউডে তিনি দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ। উত্তম কুমারের যুগ থেকে টলিউডে অভিনয় শুরু করে বহু বিখ্যাত ছবিতে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণার বহু ছবিতে ‘ঠাম্মি’ চরিত্রে তাঁকে স্মরণীয় করেছেন দর্শক। ধারাবাহিকে নিয়মিত ছিলেন না, তবে ‘মঞ্জরী অপেরা’, ‘ঠগিনী’, ‘আলো’সহ অনেক খ্যাতনামা ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ধার-দেনা করে চিকিৎসার খরচ মেটাতে হতো, যা শিল্পী সম্মিলনী ও সহকর্মীদের সহযোগিতায় সামলানো হতো।
গত মার্চ মাসে ২৪ দিন হাসপাতালে থাকার পর বাসন্তী দেবী বাড়ি ফিরে ‘গীতা এলএলবি’র শুটিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন। অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শুটিং করতেন এবং মাসে ওষুধের জন্য ২০ হাজার টাকা ও ইনজেকশনের জন্য ৪৫ হাজার টাকা খরচ হতো। এ সকল কষ্ট সত্ত্বেও তাঁর পেশাদারিত্ব ছিল অনবদ্য।
অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই বাংলা ধারাবাহিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে বাংলা বিনোদন জগৎ আজও তাঁকে মনে রাখবে।
