দেশ -দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান কুকুরের কামড়ানোর ঘটনা জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক কেউই এই ধরনের হামলার শিকার হওয়া থেকে নিরাপদ নয়। চেন্নাইয়েও পোষা ও পথকুকুরের হামলার একাধিক গুরুতর ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য গ্রেটার চেন্নাই কর্পোরেশন (GCC) এবার পোষা কুকুরের জন্য কঠোর নির্দেশিকা জারি করেছে।
GCC স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এখন থেকে পোষা কুকুরকে কেবল তখনই বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে যখন তার মুখে মাস্ক, গলায় ফিতে ও বেল্ট থাকবে। যে কোনো ব্যক্তি যদি এই নিয়ম অমান্য করে পোষা কুকুরকে রাস্তা, পার্ক বা অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে নিয়ে যান, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চেন্নাইয়ে প্রত্যেক কুকুর মালিককে তাদের পোষ্যকে রেজিস্ট্রেশন করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে জলাতঙ্কের মতো গুরুতর রোগের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এটি কেবল পশুর সুরক্ষা নয়, মানুষের জীবনও সুরক্ষিত রাখবে।
কর্পোরেশন আরও নির্দেশ দিয়েছে, আক্রমণাত্মক ও হিংস্র স্বভাবের কুকুর পোষা থেকে বিরত থাকা উচিত। এমন প্রজাতির কুকুর পোষার ফলে যদি অন্যদের জন্য হুমকি তৈরি হয়, তাহলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া একবারে শুধুমাত্র একটি কুকুরকে জনসমক্ষে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাতে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।
সম্প্রতি চেন্নাইয়ে একটি পিটবুল প্রজাতির কুকুর একজন ৫৫ বছর বয়সী ব্যক্তির উপর মারাত্মক হামলা চালায়, যার ফলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। একই ঘটনায় কুকুরের মালকিনও গুরুতর আহত হন। কাঞ্চিপুরম ও মাদুরাইয়েও কুকুর কামড়ানোর ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন পাঁচ বছরের শিশু এবং একজন ৬০ বছর বয়সী মহিলা ছিলেন।
সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের মতে, চেন্নাইয়ে প্রতি মাসে শত শত মানুষ কুকুরের কামড়ানোর অভিযোগ নিয়ে আসেন। এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান এবং সমাজের সুরক্ষার জন্য তা একটি গুরুতর সমস্যা।
GCC মনে করছে, এবার কঠোর নিয়ম প্রয়োগের সময় এসেছে। পোষা কুকুরের ওপর নিয়ন্ত্রণহীনতা এতদিন চলছিল; এই নতুন নির্দেশিকা তা নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় পশু কল্যাণ বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
