রাজ্য – দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ক্রমে শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ এবং ওড়িশার একাধিক জেলায় আগামী পাঁচদিন টানা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। ভারী বৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ এবং দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মৎস্যজীবীদের জন্য সমুদ্রে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকালে গভীর নিম্নচাপটি ওড়িশার গোপালপুরের কাছে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। যদিও পরবর্তী সময়ে এর শক্তি কিছুটা কমে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে অনুমান। তবুও আগামী কয়েকদিন উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকূলবর্তী অঞ্চলে উত্তাল থাকবে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের আজ, শনিবার এবং রবিবার সমুদ্রে না যাওয়ার কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
কলকাতায় আজ, বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দিনভর আকাশ মেঘলা থাকবে এবং বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহ জুড়ে কলকাতায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে।
আজ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে, যেখানে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা এবং দমকা ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর আজ হলুদ সর্তকতা জারি করেছে। আগামীকাল, শুক্রবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায়। শনিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমানে। রবিবার বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে।
উত্তরবঙ্গেও আবহাওয়া পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আজ জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে, যেখানে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শনিবার মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
প্রবল বৃষ্টির ফলে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তিস্তা, তোর্সা এবং জলঢাকা নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পার্বত্য অঞ্চলে ধস নামার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
