বিদেশ – হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ছায়া সঙ্গী’ হিসেবে পরিচিত সার্জিও গরকে ভারতের নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। ৩৯ বছর বয়সি এই ব্যক্তিগত আধিকারিক বর্তমানে হোয়াইট হাউসের কর্মী-আধিকারিকদের অধিকর্তার পদে রয়েছেন। ভারতীয় সময় শনিবার ভোরে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পর থেকেই কূটনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। অনেকে বলছেন, কার্যত ট্রাম্প নিজেই নয়াদিল্লিতে ‘নিজের প্রতিনিধি’ পাঠাচ্ছেন।
গর শুধু ভারতেরই নয়, আপাতত পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও সামলাবেন। ওই দুই দেশে স্থায়ী রাষ্ট্রদূত না থাকায় তিনি চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। উপমহাদেশের এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের দায়িত্ব একসঙ্গে একজন ঘনিষ্ঠ সহকারীকে দেওয়াকে কূটনৈতিক মহল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে।
ভারত-মার্কিন সম্পর্ক বর্তমানে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে টানাপড়েনে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আস্থাভাজন একজন কর্মকর্তাকে ভারতের রাষ্ট্রদূতের পদে বসানো কূটনৈতিকভাবে বড় সংকেত বহন করছে। অন্যদিকে, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কও এখন চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে, ফলে সার্জিও গরের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে সার্জিও গরের ঘনিষ্ঠতার পেছনে দুটি বড় কারণ রয়েছে। প্রথমত, গত বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে গর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, ট্রাম্পের ‘সমৃদ্ধ আমেরিকা’ প্রচারেও তিনি মুখ্য ভূমিকা নেন। এই যোগসূত্রই তাঁকে ট্রাম্পের সবচেয়ে আস্থাভাজনদের মধ্যে একজন হিসেবে পরিচিত করেছে।
সার্জিও গরের জন্ম উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে। তাঁর পুরো নাম সার্জিও গরকোভস্কি। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি আমেরিকায় চলে যান। তবে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর অভিজ্ঞতা খুবই সীমিত। মার্কিন স্কলারশিপ বিভাগের দায়িত্ব সামলানোর সময়ে তিনি এই অঞ্চলের বিষয়ে কিছুটা ধারণা অর্জন করেছিলেন, কিন্তু সেটিকে অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরা যায় না।
ভারতের মতো বৃহৎ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশে এবং দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনীতিতে একজন তুলনামূলক অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করায় অনেকেই বিস্মিত। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ব্যক্তিগত প্রভাব আরও সুসংহত করতে চাইছেন।
