উত্তর 24 পরগণা – বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের পারিবারিক বিবাদ এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে, যা নতুন করে চাপে ফেলেছে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে। একদিকে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি ও বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, অন্যদিকে তাঁর বড় ভাই, গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। দুই ভাইয়ের এই দ্বন্দ্ব রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে।
বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরকে ঘিরে। সম্প্রতি শান্তনু ঠাকুরের উদ্যোগে নাটমন্দিরে একটি সিএএ সহযোগিতা শিবির শুরু করা হয়েছে, যেখানে মতুয়া সমাজের মানুষজন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারছেন। এ নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুব্রত ঠাকুর। তাঁর অভিযোগ, নাটমন্দির একটি পবিত্র স্থান, যেখানে শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং পুজোর আয়োজন হওয়া উচিত, রাজনৈতিক কার্যকলাপ নয়। সুব্রতের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছেন তাঁদের মা ছবিরানি ঠাকুর এবং তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরও।
অন্যদিকে, শান্তনু ঠাকুর এই ইস্যুতে বাবাকে পাশে পেয়েছেন। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর জানিয়েছেন, তাঁর অনুমতি নিয়েই নাটমন্দিরে সিএএ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বড় ছেলে সুব্রত ও ছবিরানির অবস্থানের বিরোধিতা করে ছোট ছেলে শান্তনুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। শান্তনুর অভিযোগ, সুব্রত আসলে তৃণমূলে যোগদানের পরিকল্পনা করছেন এবং মন্ত্রী হওয়ার লোভে এই বিতর্ককে উস্কে দিচ্ছেন।
শান্তনু এবং সুব্রত ঠাকুরের এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে ঠাকুরবাড়ির সদস্যরাও দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একদিকে মা ও পিসি সমর্থন করছেন সুব্রতকে, অন্যদিকে বাবা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন শান্তনুর পাশে। এই সংঘাত এখন মতুয়া সমাজের ভেতরেই বিভাজন তৈরি করেছে এবং রাজ্য রাজনীতিতেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
