এসসি-এসটি তালিকায় ‘অযোগ্য’ নাম নিয়ে অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

এসসি-এসটি তালিকায় ‘অযোগ্য’ নাম নিয়ে অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



রাজ্য – পশ্চিমবঙ্গের তফসিলি জাতি (এসসি) ও উপজাতি (এসটি) তালিকায় কিছু ‘অযোগ্য’ মানুষের নাম ঢুকে পড়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে সোমবার নবান্নে জনজাতি উন্নয়ন পর্ষদের এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। বৈঠকে উপস্থিত জনজাতি সম্প্রদায়ের এক মন্ত্রী অভিযোগ জানান, এসসি-এসটি তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ওই সম্প্রদায়ের নন। এর ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ শুনেই মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং জোর দিয়ে বলেন, বনাঞ্চলের অধিকারসহ অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা যাতে শুধুমাত্র প্রকৃত জনজাতিরাই পান, সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়, এর সঙ্গে বড় রাজনৈতিক গুরুত্বও জড়িত। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে বড় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। যদিও ২০২১ সালে কিছুটা প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল দলটি, তবুও বিজেপির প্রভাব যথেষ্ট ছিল। তবে সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার মতো জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূল জয় পেয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনজাতি ভোটব্যাঙ্ককে শক্তভাবে ধরে রাখাই এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় সরাসরি গিয়ে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, অনেক সরকারি প্রকল্পের বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রচার না থাকায় সাধারণ মানুষ সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন, প্রচারের ঘাটতি পূরণ করতে হবে এবং মানুষের কাছে প্রকল্পের তথ্য পৌঁছে দিতে হবে।

এই বৈঠকে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকেকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কেউই উপস্থিত হননি। পরে খগেন মুর্মু জানান, আমন্ত্রণপত্রে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় উল্লেখ না থাকায় তিনি যোগ দেননি।

এসসি-এসটি শংসাপত্র পেতে মানুষের হয়রানির অভিযোগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যোগ্যরা যেন কোনোভাবেই বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের একটি স্কুলের প্রশ্নপত্রে অলচিকি হরফ না থাকার বিতর্ক নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। সরকার স্বীকৃতি দেওয়ার পরও কেন এমন অবহেলা হবে, তা নিয়েও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এই নির্দেশের ফলে এসসি-এসটি তালিকা এবং জনজাতি অধিকার সংক্রান্ত সরকারি পদক্ষেপে বড়সড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top