নদিয়া – কৃষ্ণনগর শহরের মানিকপাড়ায় সোমবার দুপুরে নিজ বাড়িতে এক কলেজ ছাত্রীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিহত ছাত্রীর নাম ঈশিতা মল্লিক। অভিযোগের তীর তার প্রাক্তন প্রেমিক দেশরাজ সিংয়ের দিকে। ঘটনার প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত দেশরাজের কোনো খোঁজ মেলেনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর দুটো নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, যা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঈশিতা এবং দেশরাজ দুজনেই কাঁচরাপাড়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়ত। সেখানেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। যদিও তাদের বয়সের পার্থক্য ছিল প্রায় পাঁচ বছর। স্কুল শেষ হওয়ার পর থেকেই সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। ঈশিতার পরিবার তাকে কৃষ্ণনগরে নিয়ে আসে এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সম্প্রতি ঈশিতা ভুবনেশ্বরের একটি আইন কলেজে ভর্তি হয়েছিল এবং মঙ্গলবারই সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত দেশরাজকে ২০২২-২৩ সালে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সহপাঠীদের মারধরের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। স্কুল ছাড়ার পর দেশরাজ ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে বলে ধারণা করছে তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই তার হাতে কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র আসে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার পর দেশরাজ পলাতক। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর সে তার কয়েকজন বন্ধুকে ফোন করে আশ্রয় চাইতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘটনার কথা শুনে কেউই তাকে সাহায্য করতে রাজি হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গুলি চালানোর পর দেশরাজ পায়ে হেঁটে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার সন্ধানে ইতিমধ্যেই পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন সম্ভাব্য জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গোটা কৃষ্ণনগর শহরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা হতবাক ও আতঙ্কিত। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
