অফবিট – আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরই শুরু হবে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা বিশ্বের বাঙালিরা এই উৎসবে মেতে ওঠে। প্রতি বছর দেবী দুর্গার আগমন ও গমন ভিন্ন ভিন্ন বাহনে হয়, যা প্রকৃতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর প্রতীকী প্রভাব ফেলে। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবীর আগমন ও গমনের দিন নির্ধারণ করে বাহন, আর সেই বাহনের মাধ্যমেই ভবিষ্যতের শুভ বা অশুভ ফলাফল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
শাস্ত্রমতে, যদি সপ্তমী বা দশমী রবিবার বা সোমবারে পড়ে, দেবীর আগমন বা গমন হয় গজে (হাতি), যা শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। এতে বসুন্ধরা হয় শস্যশ্যামলা। মঙ্গলবার বা শনিবার হলে দেবী আসেন বা যান ঘোটকে (ঘোড়ায়), যা সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অশান্তি বা বিপ্লবের ইঙ্গিত দেয়। বুধবার পড়লে দেবী আসেন বা যান নৌকায়, যা বন্যার প্রতীক হলেও অনেকে একে সুফলবাহী মনে করেন। আবার বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার হলে দেবীর আগমন বা গমন হয় দোলায় (পালকি), যা মহামারী বা মড়কের সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত।
এই বছর দেবীর আগমন গজে, যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্যবৃদ্ধির শুভ সংকেত বহন করছে। তবে দেবীর গমন দোলায়, যা শাস্ত্র মতে মহামারী বা স্বাস্থ্যজনিত সংকটের ইঙ্গিত দেয়। অর্থাৎ, দুর্গাপূজা ২০২৫-এর শুরু শুভ হলেও, সমাপ্তি কিছুটা অশুভ সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করছে।
শাস্ত্র অনুযায়ী, কোনো বছর যদি দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হয়, সেটি অত্যন্ত অশুভ বলে মনে করা হয়। যেমন ২০২৩ সালে দেবী দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই হয়েছিল ঘোটকে, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়িয়েছিল।
দুর্গাপূজা ২০২৫-এর গুরুত্বপূর্ণ তারিখসমূহ:
মহালয়া: ২১ সেপ্টেম্বর, রবিবার
মহাপঞ্চমী: ২৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার
মহাষষ্ঠী: ২৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার
মহাসপ্তমী: ২৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার
মহাষ্টমী: ৩০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার
মহানবমী: ১ অক্টোবর, বুধবার
বিজয়া দশমী: ২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার
এই বছর দেবীর আগমন যে শুভ বার্তা নিয়ে আসছে, তা উৎসবের আনন্দকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে গমনের অশুভ ইঙ্গিত ভবিষ্যতের জন্য কিছুটা সতর্কতা বহন করছে।
